
নয়াদিল্লি: সীমান্তে রণসজ্জা? প্রতিদিন এই একটি বিষয়ই আলোচনার ভরকেন্দ্রে পরিণত হচ্ছে। রাজস্থান এবং পাঞ্জাবের সীমান্তে ইতিমধ্যেই অত্যাধুনিক ট্যাঙ্ক নামিয়ে দিয়েছে ভারত। দিনরাত চলছে প্রস্তুতি। চপার থেকে প্যারাট্রুপারদের দড়ি বেয়ে নামার মহড়াও হয়ে গিয়েছে। সেনাবাহিনীর বার্তা একটাই, আমরা তৈরি। সামরিক পরিভাষায় যাকে বলে, ওয়ার রেডি। এই উত্তাপ দেশের মেট্রো সিটিতে বসে বোঝা অসম্ভব। সাধারণ মানুষের মধ্যে কেউ যদি সবার আগে এর আঁচ পেয়ে থাকেন, তাঁরা সীমান্তবর্তী গ্রামের বাসিন্দা। যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হলে সবার আগে তাঁদেরই সরিয়ে নিয়ে যায় বিএসএফ, কোনও নিরাপদ জায়গায়। এবারও সীমান্তবর্তী গ্রামবাসীদের কাছেই সরকারি নির্দেশ পৌঁছেছে—‘দ্রুত ফসল কেটে ফেলুন’।
পহেলগাঁওয়ের
নৃশংস হত্যাকাণ্ড গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে। প্রত্যেক দেশবাসী এখন এর
বদলা চাইছে। দাবি একটাই, সন্ত্রাসবাদের শিকড় উপড়ে ফেলতে হবে। আর সেই শিকড়
কোথায়? গত কয়েক দশক ধরে পাকিস্তানই হয়ে রয়েছে জঙ্গিদের আঁতুড়ঘর। পহেলগাঁও
হামলাতেও লস্কর এবং জয়েশের প্রত্যক্ষ যোগাযোগের সূত্র হাতে এসেছে ভারতের।
তাই ঘটনার পরই ক্ষুব্ধ ভারত প্রথমে পাকিস্তানের সঙ্গে যাবতীয় কূটনৈতিক
সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। বাতিল হয়েছে ভিসা। বেছে বেছে ফেরত পাঠানো হচ্ছে
পাকিস্তানি নাগরিকদের।
কীভাবে, কবে, কখন হবে জঙ্গি দমন অভিযান? এই
প্রশ্নেই গত কয়েকদিন উত্তপ্ত দিল্লি থেকে শ্রীনগর। চলছে আলোচনা। কাশ্মীর
সীমান্তের প্রতিটি অঞ্চলকে করা হয়েছে সতর্ক। ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে
পাঞ্জাবের ৫৩০ কিলোমিটার এলাকায় গমের চাষ হয়। জমির পরিমাণ সব মিলিয়ে প্রায়
৪৫ হাজার একর। সেখানেই ‘নির্দেশ’ পৌঁছে গিয়েছে, ফসল দ্রুত তুলে ফেলতে হবে।
সরকারিভাবে অবশ্য একে ‘পরামর্শ’ হিসেবেই দেখাচ্ছে প্রশাসন। কেন এই
পরামর্শ? তার স্পষ্ট কোনও জবাব সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। শুধু বলা
হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে সীমান্তবর্তী এলাকার কৃষকদের নিরাপত্তার বিষয়টি
মাথায় রাখা হচ্ছে। শুধুমাত্র এই কারণেই কি ‘পরামর্শ’? পাঞ্জাবের ওই
এলাকাবাসী বহু কৃষকই কিন্তু বলছেন, দু’দিনের মধ্যে তাঁদের সব ফসল খালি করে
নিতে বলা হয়েছে। এই ‘পরামর্শ’ই তাই সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের কাছে
আতঙ্কের কারণ। তাহলে কি দিন ঘনিয়ে এল?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন