
কলকাতা: দেড়
বছর পর আমেরিকা থেকে কলকাতায় ফিরেছিলেন। তারপরই পরিবার নিয়ে কাশ্মীর।
ফেরার কথা ছিল বৃহস্পতিবার। কিন্তু, তার আগেই জঙ্গি হানা প্রাণ কেড়ে নিল
বাঙালি যুবক বিতান অধিকারীর (৪০)। কফিনবন্দি হয়ে ফিরবে তাঁর নিথর দেহ।
পরিবার
সূত্রে জানা গিয়েছে, আমেরিকায় একটি সংস্থায় সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার
হিসেবে কর্মরত ছিলেন বিতান। ফ্লোরিডায় থাকতেন। গত ৮ এপ্রিল কলকাতায় ফেরেন।
১৬ এপ্রিল স্ত্রী ও সাড়ে তিন বছরের সন্তানকে নিয়ে ভূস্বর্গ ঘুরতে
গিয়েছিলেন বিতান। আগামী কাল, বৃহস্পতিবার তাঁদের কলকাতায় ফেরার কথা ছিল।
কিন্তু ঘরে ফেরা হল না। জম্মু-কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারালেন কলকাতার
এই যুবক। খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতে বিতানের স্ত্রী সোহিনীকে ফোন করেন
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন
তিনি। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসও বিতানের বাড়িতে গিয়ে মৃতের পরিবারের
অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেন। সদা হাস্যময় বিতানের মৃত্যুতে এলাকায়
শোকের ছায়া নেমেছে।
জানা গিয়েছে, বিতানের নিজের বাড়ি বেহালায়। কিন্তু,
২১বি/২ বৈষ্ণবঘাটা লেনে মামাতো দাদা দীপক চক্রবর্তীর বাড়িতে এসে উঠেছিলেন
তিনি। কারণ, বছর দু’য়েক ধরে সন্তান হৃদানকে নিয়ে এখানেই থাকতেন বিতানের
স্ত্রী সোহিনী। প্রায় দেড় বছর বাদে কলকাতায় এসেছিলেন বিতান। কয়েকদিন আগে
সপরিবারে কাশ্মীরে ঘুরতে গিয়েছিলেন বিতান। মঙ্গলবার বিকেলে আচমকা
জঙ্গিহানা কেড়ে নিল তাঁর জীবন। রাত পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী,
পশ্চিমবঙ্গ থেকে একমাত্র বিতানের মৃত্যুর খবর মিলেছে। খবর পেয়ে বিতানের
বাড়িতে যান অরূপ বিশ্বাস। সেখান থেকে ফোন নম্বর নিয়ে বিতানের স্ত্রী
সোহিনীর সঙ্গে কথা বলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সোহিনীকে
ফোন করেন। সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীকে সোহিনী জানিয়েছেন, সেনার পোশাকে
এসে জঙ্গিরা আই কার্ড দেখতে চেয়েছিল। তারপরেই ধরে ধরে গুলি করে।
মুখ্যমন্ত্রী সোহিনীকে আশ্বস্ত করেন। তিনি জানান, দুঃসময়ে সরকার তাঁদের
পাশে আছে।
ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশে দিল্লিতে থাকা রাজ্যের
রেসিডেন্ট কমিশনার সক্রিয় হয়েছেন। রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রকের যোগাযোগ হয়েছে। রাতেই বিতানের দেহ শ্রীনগরে নিয়ে আসা হয়।
সোহিনী ও তাঁর পুত্রকে গেস্ট হাউসে রাখার ব্যবস্থা করেছে কাশ্মীর প্রশাসন।
জানা গিয়েছে, আজ, বুধবার বিতানের দেহের ময়নাতদন্ত হবে। তারপর দেহ কলকাতায়
ফেরানো হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন