হাওড়া: হাওড়া জেলার জগৎবল্লভপুর ব্লকের বড়গাছিয়া মেটাল ক্লাস্টার আজ এক গুরুত্বপূর্ণ শিল্পতালুক। এখানে গড়ে ওঠা প্রায় ১০,০০০ কারখানায় অসংখ্য শ্রমিক কাজ করেন, যারা মূলত লোহা, পিতল, অ্যালুমিনিয়াম প্রভৃতি ধাতুর জিনিসপত্র তৈরি করেন। কিন্তু নিয়মিত লোডশেডিং ও লো ভোল্টেজের সমস্যা এই শিল্পাঞ্চলের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত করছে। বিদ্যুৎ বিভাগের সংকটের কারণে থমকে যাচ্ছে উৎপাদন ব্যবস্থা। অভিযোগ প্রতিদিন দুই-আড়াই ঘণ্টার লোডশেডিং, লো ভোল্টেজের সমস্যা এবং অনিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহের কারণে কারখানাগুলোয় উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কখনো শ্রমিকদের অতিরিক্ত সময় কাজ করতে হচ্ছে, কখনো রাতের কাজ সময়মতো সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না, ফলে পরবর্তী রাতে পেতে সমস্যা হচ্ছে। বড়গাছিয়ার এক কারখানা মালিক সুমন মান্না বলেন, আমরা ব্যবসার সব ধরনের কর ও ট্রেড লাইসেন্স ফি পরিশোধ করি, কিন্তু বিদ্যুতের সমস্যার কারণে আমাদের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে অনেক সময় নির্ধারিত সময়ে পণ্য সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। এতে ব্যবসার ক্ষতি হয়, বরাত হাতছাড়া হয়, এবং অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হয়। এই ঘটনায় শ্রমিকদের দুর্ভোগ সর্বাধিক। এদের বড় অংশ দৈনিক ঘণ্টা অনুযায়ী পারিশ্রমিক পান। এই শিল্পাঞ্চলে প্রায় এক লাখ শ্রমিক কাজ করেন, যাদের অধিকাংশই স্থানীয় বাসিন্দা। লোডশেডিংয়ের কারণে ঘণ্টা হিসেবে মজুরি পাওয়া শ্রমিকদের রোজগার কমে যাচ্ছে। এক কারখানা কর্মী হিমান খাঁ বলেন, আমরা ঘণ্টা হিসেবে মজুরি পাই। বিদ্যুৎ না থাকলে সেই সময়ের কোনো টাকা পাই না। সংসারের খরচ তো কমে না, ফলে আমাদের জন্য এটা বড় সমস্যা। যদি এই বিদ্যুৎ বিভ্রাটকে কর্তৃপক্ষ সাময়িক বলেই দাবি করছেন। রাজ্য বিদ্যুৎ সংস্থার ডোমজুড় ডিভিশনের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার নির্মল মণ্ডল দাবি করেছেন যে, লোডশেডিং মূলত হাওড়া-আমতা রোড সম্প্রসারণের কারণে হচ্ছে। রাস্তার ধারে থাকা বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর জন্য মাঝেমধ্যে বিদ্যুৎ বন্ধ রাখতে হচ্ছে। তবে তিনি আশ্বাস দেন যে, লো ভোল্টেজের সমস্যা সমাধানের জন্য ইতিমধ্যে নতুন ট্রান্সফরমার বসানো হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করি, সামনের গরমে আর বড় কোনো সমস্যা হবে না।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন