যাদবপুর: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে রাজ্যের রাজনৈতিক বিতর্ক তুঙ্গে। বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী সরাসরি ‘সেকুলার’ ও ‘মাকু’দের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন, যা তাঁর মতে তৃণমূল কংগ্রেসের ‘তোষণনীতি’র ফলাফল। তৃণমূলের মদতে হিন্দু বিদ্বেষ ছড়ানোর পরিকল্পনা চলছে বলেই সোমবার দাবি করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
শুভেন্দু বলেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন ধরে ‘বামপন্থী’ ও ‘সেকুলার’দের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, যেখানে হিন্দু সংস্কৃতি ও জাতীয়তাবাদী ভাবধারা দমন করা হয়। তিনি আরও বলেন, ‘এখানে ভারতীয় সংস্কৃতি ও জাতীয় সঙ্গীতকে দমন করা হয়। রাম মন্দিরের উদ্বোধনের পোস্টার লাগানো নিষিদ্ধ। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন পালন করা যায় না। ‘জয় শ্রীরাম’ ও ‘বন্দে মাতরম’ ধ্বনি নিষিদ্ধ। হিন্দু পরিচয় দেওয়া গেলেও, নির্দিষ্ট কিছু মতাদর্শ প্রচার করা হয়।
শুভেন্দু আরও দাবি করে বলেন, এই অবস্থা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রত্যক্ষ মদতে তৈরি হয়েছে এবং তিনি এটিকে ‘ফিলিস্তাইনের দানব’ বলে অভিহিত করেন, যা এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। পাশাপাশি বিরোধী দলনেতা ২০১১ ও ২০২৩-এর ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে আক্রমণ করে বলেন, ২০১১ সালে যখন পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় (বর্তমানে উপরাষ্ট্রপতি) যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাগুলি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন, তখনই যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ব্যবস্থা নিত, তাহলে এই পরিস্থিতি তৈরি হত না।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ২০২৩ সালে নদিয়ার এক ছাত্রকে ঘেরাও করে হত্যা করা হয়। সেই সময় তিনি যুব মোর্চার প্রতিবাদে যোগ দিয়েছিলেন, যেখানে তাঁর উপর হামলা চালানো হয়। তাঁর দাবি এই হামলা ‘মৌলবাদী’ গোষ্ঠীর পরিকল্পিত ছিল। মাদার নামে ‘সরস্বতী গার্ডেনে হামলা চালানো হয়। পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করলেও, মমতার নির্দেশে রাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। শুভেন্দু অভিযোগ করেন, যাদবপুরে যারা ‘কাশ্মীরের স্বাধীনতা’ চায়, তারাই ‘নো ভোট টু বিজেপি’ প্রচারে আড়ালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছে। তাঁর মতে, মমতা রাজনৈতিক লাভের জন্য এসব ‘দেশবিরোধী’ কার্যকলাপ মদত পাচ্ছে। বিজেপি সরকার এলে ‘উত্তরপ্রদেশ মডেল’ হবে বাংলায়।
শুভেন্দু বলেন, পশ্চিমবঙ্গকে বাঁচাতে হলে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী বিজেপি সরকার গঠন করতে হবে। তিনি উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসন ও গুজরাটের শিল্পায়নের মডেল তুলে ধরেন এবং আসামের মতো ‘রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশকারীদের’ তাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন। গুজরাটের মতো উন্নত শিক্ষাব্যবস্থা হবে। এছাড়াও ২০২৩-এর নির্বাচনের প্রস্তুতি ও বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, আগামী ১০ মাসের মধ্যে বাংলার মানুষের উচিত এই ‘অবিচার’-এর বিরুদ্ধে লড়াই করা।
শুভেন্দু আরও বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার পুলিশনির্ভর, সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ নয়। কাশ্মীরের স্বাধীনতা চাইলে, সেই গোষ্ঠীগুলোকে নির্মূল করতে হবে, বাংলাকে সুশাসনের পথে আনতে বিজেপি-র সরকার দরকার।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন