দেরাদুন: উত্তরাখণ্ডের বদ্রীনাথের কাছে ভারত-চিন সীমান্তের মানা গ্রামে তুষারধসের কারণে অন্তত ২৫ জন শ্রমিক আটকে পড়েছেন। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জাতীয় এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজ শুরু করে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কয়েকজন শ্রমিককে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে এবং বাকিদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
প্রায় ছয় থেকে সাত ফুট পুরু বরফের স্তর এবং প্রতিকূল আবহাওয়া উদ্ধারকাজে বাধা দিচ্ছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেখানে ২৫ জন শ্রমিক আটকে ছিলেন। রাজ্য এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী জানান, ঘটনাস্থলে দৃশ্যমানতা কম থাকায় হেলিকপ্টার ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলায় মানা গ্রামে আচমকা তুষারধস হয়। সেই সময় কিছু শ্রমিক গ্রামের রাস্তায় কাজ করছিলেন এবং তুষারধসের কারণে তারা আটকা পড়েন। রাজ্য এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশ এবং বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন (বিআরও)-র সদস্যরাও উদ্ধারকাজে যোগ দিয়েছেন।
বিআরও-র এক ইঞ্জিনিয়ার সিআর মীনা সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, ঘটনাটি বিআরও-র একটি ক্যাম্পের কাছে ঘটেছে। ঘটনার পরেই উদ্ধারকাজ শুরু হয় এবং তিনটি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। তবে আবহাওয়া খারাপ থাকায় উদ্ধারকাজে সমস্যা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী ধামী পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আটকে থাকা শ্রমিকদের দ্রুত উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। ভারতীয় সেনারাও উদ্ধারকাজে সাহায্য করছে, তবে দৃশ্যমানতা কম থাকায় হেলিকপ্টার ব্যবহার করা যাচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর মতে, আটকে পড়া মানুষদের উদ্ধার করাই এখন প্রধান কাজ।
অন্যদিকে, অবিরাম তুষারপাতের কারণে জম্মু ও কাশ্মীর বিপর্যস্ত। শুক্রবার সকাল থেকে জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন স্থানে তুষারপাত শুরু হয়েছে। বরফ জমে যাওয়ায় জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বানিহাল এবং কাজিগুন্ডের কাছে সড়কের উপর পুরু বরফের স্তর জমে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। জম্মু ও কাশ্মীরের পাশাপাশি হিমাচল প্রদেশের লাহুল এবং স্পিতিতেও ভারী তুষারপাত হচ্ছে। এই দুই অঞ্চলে তুষারধসের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ভারতীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আবহাওয়ার পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে এবং কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। উত্তরাখণ্ড-সহ পার্বত্য অঞ্চলে শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন