নয়াদিল্লি: গরু পাচার মামলায় আপাতত তাঁর ঠিকানা দিল্লির বিখ্যাত তিহাড় জেল৷ গত বুধবার সন্ধ্যায় দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকে গ্রেফতার করে এনফোর্সমেন্ট জেরেক্টরেট৷ ইডি হেফাজত শেষে তাঁকে ১২ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট। রবিবার ছিল ছুটির দিন৷ ফলে এদিন বিশেষ বিচারক নরেশকুমার লাকা-র এজলাসে ভার্চুয়ালি পেশ করা হয় কেষ্ট-কন্যাকে। ১২ মে তাঁকে ফের আদালতে পেশ করা হবে৷
রবিবার জেল হেফাজতের খবর শোনার পরই বাবার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে চেয়েছিলেন সুকন্যা। কিন্তু তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়। প্রথমে মনে করা হয়েছিল, একই জেলে থাকায় এবার হয়তো বাবা ও মেয়ের সহজেই সাক্ষাৎ হবে। কিন্তু বাস্তব ততটাই সহজ নয়৷ দেখা করতে হলে সবার আগে জেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাতে হবে তাঁদের৷ অনুমতি মিললে তবেই হবে বাবা-মেয়ের মোলাকাত৷
আর্থিক তছরূপের মামলায় সকল অভিযুক্তকেই রাখা হয়েছে তিহাড় জেলের ৭ নম্বর ব্লকে। বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ছাড়াও এই ব্লকেই রয়েছেন তাঁর প্রাক্তন দেহরক্ষা সায়গল হোসেন, হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারি এবং গরুচাপার মামলার কিংপিন এনামুল হক৷ পাশাপাশি দিল্লিতে আর্থিক তছরূপের মামলায় গ্রেফতার মণীশ সিসোদিয়া, সত্যেন্দ্র জৈনরাও রয়েছেন একই জায়গায়। সেই সূত্রেই মনে করা হচ্ছিল, সুকন্যাও সম্ভবত একই ব্লকে থাকবেন এবং তাঁর বাবার সঙ্গেও দেখা হবে৷
কিন্তু তিহাড় জেল সূত্রে খবর, এত সহজে বাবা ও মেয়ের দেখা হওয়া সম্ভব নয়। কারণ, সুকন্যাকে রাখা হয়েছে মহিলা ওয়ার্ডে। সেটা পুরুষ ওয়ার্ডের চেয়ে অনেকটাই দূরে। বিশাল এলাকা জুড়ে থাকা তিহাড় জেলে পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডের দূরত্ব অনেকটাই। তাছাড়া দেখা করতে হলে সবার আগে জেল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানাতে হবে সুকন্যা কিংবা অনুব্রতকে। অনুমোদন মিললে তবেই মুখোমুখি হবে বাবা-মেয়ে৷ জানা গিয়েছে, সুকন্যা এখনও পর্যন্ত বাবার সঙ্গে দেখা করার আবেদন জানাননি। তবে তিনি কথা বলতে চেয়েছেন অভিন্নহৃদয় বান্ধবী সুতপা পালের সঙ্গে। অন্যদিকে, অনুব্রতও মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে এখনও পর্যন্ত আবেদন করেননি। তবে মেয়ের গ্রফতারি নিয়ে সোমবার প্রথম মুখ খুললেন তিনি৷
সোমবার তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা অনুব্রতকে হাজির করানো হয়েছিল দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে। সেখানেই সুকন্যার গ্রেফতারি নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। সংক্ষেপেই নিজের প্রতিক্রিয়া জানান ধৃত তৃণমূল নেতা। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘মেয়েকে গ্রেফতার করা অন্যায়।’’
গরু পাচার মামলায় সাড়ে আট মাস আগে গত ১১ অগাস্ট গ্রেফতার হয়েছিলেন সুকন্যার বাবা অনুব্রত মণ্ডল। তার পর থেকেই তদন্তকারীদের নজরে ছিলেন তাঁর মেয়ে সুকন্যা। তাঁর নামে অগাধ সম্পত্তির হদিশ পেয়েছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী অফিসাররা৷
এদিকে, আজ অনুব্রতর জেল হেফাজতের মেয়াদ ৪ মে পর্যন্ত বাড়িয়ে দিল আদালত। ফলে এখনই রাজ্যে ফেরা সম্ভব হচ্ছে না তাঁর৷ তিহাড় থেকে আসানসোল আদালতে ফিরতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন অনুব্রত৷ তবে আদালতের নির্দেশে ফের তিহাড়েই ফিরতে হচ্ছে তাঁকে৷
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন