কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় একের পর এক কড়া পদক্ষেপ, তাঁকে জনপ্রিয়তার শিখড়ে নিয়ে গিয়েছিল৷ তাঁর পর্যবেক্ষণ, তাঁর নির্দেশ বঞ্চিতদের মনে আশা জাগিয়েছিল৷ কিন্তু দলগত ভাবে বারবার তাঁর সমালোচনা করে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস৷ বারবার তাঁকে নিশানা করেছেন দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ৷ তাঁর বক্তব্য ছিল, “উনি রায় দিয়ে ওঁর ইচ্ছাপূরণ করছেন। বিচারপতির আসন ছেড়ে ওঁর রাজনীতিতে যোগ দেওয়া উচিত”।
বিচারাধীন মামলা নিয়ে টেলিভিশনে সাক্ষাৎকার দেওয়ার অভিযোগে শুক্রবার সুপ্রিম নির্দেশে সেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকেই সরানো হল দুর্নীতির মামলা৷ এদিন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিষয়ে রায় ঘোষণার সময় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, “বিচারপতিদের কঠিন দায়িত্ব পালন করতে হয়। ঠিক যে কারণে মামলাটি অন্য এজলাসে সরানোর কথা বলা হয়েছে, তা নেপথ্যে রয়েছে ওই ট্রান্সক্রিপ্ট (টিভিতে দেওয়া বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকারের প্রতিলিপি)।” এর পরেই প্রধান বিচারপতির সংযোজন, “যাতে প্রকাশ্যে কেউ বলতে না পারেন যে বিচারপতি পক্ষপাতদুষ্ট ছিলেন।”
প্রসঙ্গত, বিচারপতিদের একাংশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তুলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও৷ সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এদিন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, “বিজেপি ভোটের লড়াইয়ে পেরে উঠছে না। বিচার ব্যবস্থার দু-একজনকে কাজে লাগিয়ে তারা গত ২২ মাসে ২৩ টি সিবিআই করিয়েছে।”
এদিন সুপ্রিম কোর্টে শুনানির সময় সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “যখনই কোনও ব্যক্তির বিরুদ্ধে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, তখনই বিচারপতির উপর আক্রমণের ঘটনা ঘটছে। পেপারওয়েট, হাওয়াই চটি নিয়ে তেড়ে যাওয়া হচ্ছে। পোস্টার লাগানো হচ্ছে। যা বিচারব্যবস্থার মনোবলের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।”
এর পরেই প্রধান বিচারপতির উদ্দেশে সলিসিটর জেনারেল বলেন, “আপনি কিছু একটা বলুন, যাতে বিচারব্যবস্থাকে অপমানিত হতে না হয়।” এ কথা শোনার পরেই প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, “আপনি ঠিকই বলছেন। কোনও বিচারপতিকে চোখ রাঙানো যায় না। আমি যদি এরকম দেখি, তা হলে রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব।”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন