কলকাতা: এপ্রিলেই গরমে কাহিল দক্ষিণবঙ্গবাসী৷ তীব্র দহন জ্বালা সইতে হয়েছে অন্যান্য রাজ্যের মানুষকেও৷ তবে হালকা বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি নেমে সেই জ্বালা কিছুটা জুড়িয়েছে৷ কিন্তু গরমের দাপট এখানেই শেষ নয়৷ আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এটা তো কেবলমাত্র ট্রেলর৷ আসল ছবি দেখা যাবে মে মাসে! আসছে মাসে ছক্কা হাঁকাবে গরম৷ দুর্বিসহ গরমে নাভিশ্বাস উঠবে মানুষের। কাঠাফাটা রোদের সঙ্গে দোসর হয়ে দেখা দেবে ভয়ঙ্কর তাপপ্রবাহ৷ তাপমাত্রা পৌঁছবে ৪০ থেকে ৪৫ ডিগ্রির ঘরে। অত্যধিক গরমের সঙ্গে মে মাস জুড়ে দেশে বিদ্যুতের ঘাটতি তৈরি হতে পারে বলেও আশঙ্কা।
আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন, এপ্রিলকে বেশ কয়েক গোল দিয়ে এগিয়ে যাবে মে এবং জুন মাস। পরিস্থিতি হয়ে উঠবে দুর্বিসহ৷ চৈত্রের শেষ থেকে যে তীব্র দহন জ্বালা সইতে হয়েছে এ রাজ্যের মানুষকে, তার চেয়েও ভয়ঙ্কর দিন অপেক্ষা করছে৷ তবে শুধু এ রাজ্যেই নয়, গোটা দেশজুড়ে চলবে গরমের দাপট। মৌসম ভবন জানাচ্ছে, অন্যান॥ বছরের তুলনায় চলতি মরশুমে মে মাসে তুলনামূলকভাবে বেশি গরম পড়বে। তাপমাত্রাও ৪০ থেকে ৫০ ডিগ্রির আশপাশে ঘোরাফেরা করবে। গরমের প্রভাব সবচেয়ে বেশি থাকবে পূর্ব থেকে মধ্য ভারতের রাজ্যগুলিতে।
দিন কয়েক আগেও গরমের হলকা হাওয়ায় অতিষ্ট হয়ে উঠেছিল এ রাজ্যের মানুষ। তবে কালবৈশাখী ঝড় এসে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে। তবে এই পরিস্থিতি খুব বেশিদিন স্থায়ী হবে না৷ হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, আগামী ৩ মে পর্যন্ত ঝড়-বৃষ্টির পরিস্থিতি থাকবে৷ তার পর থেকেই একেবারে জ্বালাপোড়া ধরবে৷
হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, পূর্ব মধ্য় এবং পূর্বাঞ্চলে আগামী এক মাস তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই বেশি থাকবে। উত্তর পূর্ব ভারতের বেশ কিছু অংশেও এই বছর স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি গরম অনুভূত হবে। তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হবে রাজ্যগুলিতে। তবে উত্তর পশ্চিম এবং মধ্য় পশ্চিম ভারতে তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকবে বলেই পূর্বাভাস৷
একে তো প্রবল গরম আসছে, তার উপর নাজেহাল পরিস্থিতি তৈরি হবে বিদ্যুৎ ঘাটতিতে৷ কারণ অতিরিক্ত গরমের জেরে বিদ্যুৎ সরবরাহ এবং চাহিদার উপরেও ব্যাপক প্রভাব পড়তে চলেছে। একইসঙ্গে দেশের অর্থনীতির উপরেও প্রভাব পড়বে। তাপপ্রবাহের হাত থেকে বাঁচতে দিন-রাত চলবে ফ্য়ান, এসি৷ খুব স্বাভাবিক ভাবেই বাড়বে বিদ্যুতের চাহিদা। ব্য়াপক চাপ পড়বে পাওয়ার গ্রিডগুলির উপরে। ফলে বাড়বে ব্ল্যাকআউটের সম্ভাবনা। পাশাপাশি তীব্র দহনে মৃত্যুর আশঙ্কাও অনেকটা বড়বে। বাড়বে হিটস্ট্রোকের সম্ভাবনা৷ বাতাসে অস্বস্তিকর আপেক্ষিক আর্দ্রতা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলবে।
তবে চলতি বছর দেশের বর্ষা স্বাভাবিক ছন্দেই আসবে৷ তেমনটাই জানিয়েছে দিল্লির মৌসম ভবন। বিজ্ঞান মন্ত্রকের সচিব এম রবিচন্দ্রন বলেন, ‘‘জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসে ভারতে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে৷" আইএমডি-র ডিরেক্টর জেনারেল এম মহাপাত্র জানান, চলতি মরশুমে ৬৭ শতাংশ বৃষ্টি হবে৷ পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯ সালে দেশে বৃষ্টিপাত হয়েছিল ৯৭১.৮ মিলিমিটার, ২০২০ সালে ৯৬১.৪ মিলিমিটার, ২০২১ সালে ৮৭৪.৫ মিলিমিটার এবং ২০২২ সালে ৯২৪.৮ মিলিমিটার। প্রতিবারের মতো এ বছরও ১ জুনই কেরালায় প্রথম বর্ষা ঢুকবে। তবে ততদিন পর্যন্ত গরমে নাজেহাল হবে দেশবসী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন