জলপাইগুড়ি: কিশোরীকে অপহরণের পর ধর্ষণ করে খুন। এরপর তথ্যপ্রমাণ লোপাট করতে সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দেওয়া হয়েছিল দেহ। ওই ঘটনায় বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত তিনজনের ফাঁসির সাজা হল। জলপাইগুড়ির বিশেষ পকসো আদালতের বিচারক রিণ্টু শূর এদিন ওই সাজা ঘোষণা করেন।
২০২০ সালের ১০ আগস্ট ঘটনাটি ঘটে জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ থানা এলাকায়। ঘটনার পরদিন ওই কিশোরীর পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে। সাজাপ্রাপ্তদের নাম রহমান আলি, জামিরুল হক ও তামিরুল হক। প্রথমজনের বাড়ি রাজগঞ্জের প্রধানপাড়া এলাকায়। জামিরুল রাজগঞ্জের শৌলমারি এলাকার বাসিন্দা। তামিরুলের বাড়ি জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার অধীন জহুরি তালমা এলাকায়। নিহত কিশোরী মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। নিখোঁজের ১২ দিন পর বাড়ি থেকে প্রায় ১০ কিমি দূরে একটি নির্মীয়মাণ সেপটিক ট্যাঙ্কের ভিতর তার দেহ পাওয়া যায়। মামলায় সরকার পক্ষের আইনজীবী দেবাশিস দত্ত বলেন, এদিন রায় ঘোষণার সময় বিচারক ঘটনাটিকে বর্বরোচিত, নির্মম ও নিষ্ঠুর বলে উল্লেখ করেন। জলপাইগুড়ি আদালতে একই মামলায় তিনজনের ফাঁসির সাজা ঘোষণা নজিরবিহীন।
এদিন আদালত চত্বরে হাজির ছিলেন নিহত কিশোরীর বাবা-মা সহ পরিবারের সদস্যরা। নিহত ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, বিচারব্যবস্থার উপর আস্থা আছে। পাশবিক অত্যাচার চালিয়ে আমার মেয়েকে যারা খুন করেছে, তাদের চরম শাস্তি হোক এটাই চেয়েছিলাম। আদালত তিনজনকেই ফাঁসির সাজার নির্দেশ দিয়েছে। আমরা খুশি।
রাজগঞ্জের সন্ন্যাসীকাটা অঞ্চলের বালাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা নিহত ছাত্রীর বাবার দাবি, ২০২০ সালের ১০ আগস্ট সন্ধ্যায় বাড়ির সামনে থেকে আমার মেয়েকে অপহরণ করা হয়। ঘটনার দু’দিন পর বাড়িতে ফোন পাই, মেয়েকে শিলিগুড়ির কাছে চটেরহাট এলাকায় আটকে রাখা হয়েছে। কিন্তু পুলিস সেখানে গিয়ে মেয়ের কোনও খোঁজ পায়নি। ১২ দিন পর বাড়ি থেকে প্রায় ১০ কিমি দূরে প্রধানপাড়া এলাকায় একটি নির্মীয়মাণ সেপটিক ট্যাঙ্কের ভিতর থেকে মেয়ের দেহ উদ্ধার হয়।
মামলার সরকারপক্ষের আইনজীবী বলেন,অপহরণের পর বারবার ডেরা পাল্টে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে অভিযুক্তরা। পরে তাদের একজনের পরনের গেঞ্জি গলায় পেঁচিয়ে ১৬ বছরের ওই কিশোরীকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। খুনের পর দেহটি বাইকে চাপিয়ে অনেকটা দূরে নিয়ে গিয়ে বাঁশঝাড়ের মধ্যে একটি নির্মীয়মাণ সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দেয় অভিযুক্ত তিন যুবক। তদন্তে নেমে পুলিস তাদের গ্রেপ্তার করে। মামলায় পুলিসের দু’জন তদন্তকারী অফিসার ছিলেন। তাঁরা দ্রুত তদন্ত শেষ করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। মামলায় মোট ২৭ জন সাক্ষ্য দিয়েছিলেন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন