সরকার নির্ধারিত ফি ২৪০ টাকা, স্কুল নিচ্ছে ১০৫০ - Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Breaking

Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Aaj Bikel is currently West Bengal's leading, popular, authentic and trustworthy digital media. Aaj Bikel News has become the voice of crores of readers and viewers.

বুধবার, ২ জুলাই, ২০২৫

সরকার নির্ধারিত ফি ২৪০ টাকা, স্কুল নিচ্ছে ১০৫০



মেদিনীপুর:  না, কোনও ঝাঁ-চকচকে বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল নয়। খোদ সরকারি স্কুলে ভর্তির জন্য দিতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। সরকারি নিয়মকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বাড়তি টাকা নেওয়ায় ক্ষুব্ধ অভিভাকদের একাংশ তো বটেই, এমনকী স্কুলের কমিটির সদস্যরাও। গল্পটা মেদিনীপুর শহরের বিদ্যাসাগর বিদ্যাপীঠ হাই স্কুলের (বয়েজ)। ইতিমধ্যেই স্কুল কমিটির সভাপতি অঞ্জলি সিনহা মুখ্যমন্ত্রীকে অভিযোগ জানিয়েছেন। অপরদিকে, স্কুলের প্রধান শিক্ষক অরূপ ভূঁইয়া বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসহযোগিতার উদাহরণ তুলে ধরে স্কুলের কমিটির বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু স্কুল কমিটির অভিযোগটি হল, স্কুলে ভর্তির সময় বাড়তি টাকা নেওয়া হচ্ছে। যেখানে পঞ্চম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলে ভর্তির জন্য ২৪০ টাকা নেওয়ার কথা। সেখানে ভর্তির সময় ১ হাজার ৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। অপরদিকে, মাধ্যমিকে অর্থাৎ দশম শ্রেণিতে সরকারি নিয়ম অনুসারে ভর্তির জন্য প্রয়োজন ৫৬০ টাকা। সেখানে ভর্তির জন্য ১ হাজার ২৫০ টাকা নেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সময়ে প্রায় ডাবলের বেশি টাকা নেওয়া হয়। শুধু একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সময় ২ হাজার ৭০০ টাকা নেয় স্কুল। তবে এই বিপুল পরিমাণে টাকা নিলেও, সেই টাকার হিসেব দেননি প্রধান শিক্ষক। স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, মেদিনীপুর শহরের একাধিক নামী সরকারি স্কুলে এই ‹জুলুমবাজি› চলছে। অভিভাবকরা জানিয়েছেন, ডোনেশনের নামে টাকা নেওয়া হচ্ছে। টাকা না দিতে পারলে স্কুল ভর্তি নিচ্ছে না। এরফলে সরকারি স্কুলেও পড়াতে ভালোই খরচ হচ্ছে। সকল পরিবারের ক্ষেত্রে সেই টাকা দেওয়া সম্ভব নয়।

স্কুল কমিটির সভাপতি অঞ্জলি সিনহা বলেন, স্কুলের আয়ব্যয়ের কোনও হিসেব পাইনি। সেই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। আশা করছি সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে। স্কুলে ভর্তির ফি বেশি থাকায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে অনেক অভিভাকদের। কারণ সকলের পক্ষে বেশি টাকা খরচ করা সম্ভব নয়। তবে স্কুলের প্রধান শিক্ষক অরূপ ভূঁইয়া বলেন , স্কুলে যে টাকা নেওয়া হয় , সেটি ডোনেশন হিসেবে। না হলে এত বড় স্কুল চালানো সম্ভব নয়। বাড়তি অনেক কাজ থাকে, তাই অনেক টাকা খরচ করতে হয়। তবে স্কুল কমিটি অসহযোগিতা করছে। মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছি। প্রসঙ্গত, একসময় মাওবাদী আন্দোলনের জেরে জেলার শিক্ষা ব্যবস্থায় ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল। অশান্তির বাতাবরণ থাকায় স্কুলে যেতে পারত না পড়ুয়ারা। সেই সময় সামান্য সরকারি প্রকল্পের সুবিধাটুকুও পেত না স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। তবে বর্তমানে ছবিটা বদলেছে। কন্যাশ্রী সহ নানা প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছে পড়ুয়ারা। এছাড়া হাইস্কুলের ছাত্রছাত্রীদের জন্য ট্যাব, সাইকেল দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও ছাত্রছাত্রীদের দেওয়া হচ্ছে প্যান্ট , জামা বইপত্র। সেখানে এই ডোনেশন শিক্ষার প্রসারের পরিপন্থী বলে মনে করছেন অভিভাবকরা। একইসঙ্গে বাড়তে পারে স্কুল ছুটের সংখ্যা। জানা গিয়েছে, এই স্কুলের বিরুদ্ধে অভিভাবকরাও অভিযোগ জানিয়েছে। কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয়নি। শহরের বিভিন্ন পরিবারের সন্তানদের বড় স্কুলে ভর্তির প্রবণতা রয়েছে। এতে পড়ুয়ার পড়াশোনার মান একই থাকলেও , স্ট্যাটাস বাড়ছে। আর তারই সুযোগ নিচ্ছে স্কুলগুলো। তবে ইতিমধ্যেই স্কুলগুলোর গতিবিধির উপর নজর রাখতে শুরু করেছে শিক্ষাদপ্তর। এনিয়ে মেদিনীপুরের বিধায়ক সুজয় হাজরা বলেন, বিষয়টি নজরে এসেছে। জেলার প্রত্যেকটি স্কুলের উচিত সরকারের নিয়ম মেনে চলা।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Loading...