মেদিনীপুর: ‘২১ জুলাই নতুন চমক থাকবে, গোটা পশ্চিমবঙ্গ দেখবে!’ শনিবার খড়গপুরের মাটিতে দাঁড়িয়ে দিলীপ ঘোষ এ কথা বলার পর বেজায় ক্ষুব্ধ বিজেপির জেলা নেতৃত্বের একটা অংশ। বেকায়দায় পড়েছেন দিলীপ ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত নেতারা। তবে একান্ত আলাপচারিতায় দিলীপবাবুর বিরুদ্ধেই সোচ্চার হচ্ছেন তাঁরা। জেলা বিজেপির নেতাদের একাংশের কথায়, কোনও কর্মসূচিতে দিলীপবাবুকে ডাকা হচ্ছে না। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভাতেও দিলীপবাবুকে দেখা যায়নি। এমনকী নতুন রাজ্য সভাপতির অভিনন্দন সমারোহেও উপস্থিত ছিলেন না দিলীপবাবু। বিভিন্ন দলীয় অনুষ্ঠান দিলীপবাবুকে ছাড়াই সফল হয়েছে। উনি দলের কাছে গুরুত্ব হারিয়ে ফেলেছেন। দিলীপবাবুর এই বক্তব্য ওঁর ঘনিষ্ঠ নেতাদেরই মনোবল কমাবে। দলের কোনও ক্ষতি হবে না।
এদিন দিলীপবাবু বলেন, রাজনীতিতে দিলীপ ঘোষ সবসময় ফুল ফোটায়। ২১ জুলাই নতুন চমক থাকবে, গোটা পশ্চিমবঙ্গ দেখবে। অনেকে অনেক কিছু বলছেন। ২১ তারিখ বোঝা যাবে। তবে এনিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না তৃণমূল নেতৃত্ব। এদিন জেলা তৃণমূলের সভাপতি সুজয় হাজরা বলেন, এটা বিজেপির অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। উনি মিডিয়ায় আসার জন্য এমন কথা বলেছেন। গোটা বিষয়টাই সাজানো। দলকে হয়তো পাশে পাচ্ছেন না। তাছাড়া মানুষও পাশে নেই। তাই মিডিয়ার সামনে চমক দেখাচ্ছেন। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের পর থেকেই গোটা রাজ্যের মতো পশ্চিম মেদিনীপুরেও বিজেপির সংগঠন বাড়তে শুরু করে। সংগঠন ঢেলে সাজাতে বিশেষ ভূমিকা নেন দিলীপ ঘোষ। ফলস্বরূপ ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচন ও ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ভালো ফল করে বিজেপি। সাংসদ হন দিলীপবাবু। তবে ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপির রথ মুখ থুবড়ে পড়ার পর থেকেই দলের অন্দরে ডামাডোল তৈরি হয়। তৃণমূল থেকে আসা নেতারা ব্যাপক হারে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে। তবে একের পর এক নির্বাচনে হারতে থাকে বিজেপি। জেলা বিজেপির এক নেতার কথায়, রাজ্য সভাপতির পদ থেকে সরে যাওয়ার পর দিলীপবাবু দলের অন্দরে ক্রমশ কোণঠাসা হচ্ছিলেন। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমন্ত্রণে দীঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর থেকে দলের সঙ্গে দূরত্ব আরও বাড়তে শুরু করে। ২১ জুলাই তৃণমূলের শহিদ দিবস পালিত হবে। সেই মঞ্চে দিলীপবাবু থাকতে পারেন বলে অনুমান করছে রাজনীতি বিশেষজ্ঞদের একাংশ। আবার একাংশের অনুমান, তিনি নতুন দল গড়ে তুলতে পারেন। অথবা, সেই দিন দলের অন্দরে থেকেই বিদ্রোহ ঘোষণা করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে বঙ্গ বিজেপিতে বড় ধস নামতে পারে। জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ রফিক বলেন, দিলীপবাবু লোকসভা নির্বাচনে জিততে পারেননি। তিনি কোথায় গেলেন, আর কোথায় থাকলেন, তাতে কিচ্ছু সমস্যা নেই। যাঁরা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে, তাঁদের মানুষ উচিত শিক্ষা দেবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন