শিলিগুড়ি: উন্নয়ন নিয়ে রাজনীতি করলে দশ গোল খাবে। তাই বিভাজনের রাজনীতি আমদানি করে শান্ত শিলিগুড়িকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে গেরুয়া শিবির। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বলেন শিলিগুড়ির মেয়র তথা তৃণমূল কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা গৌতম দেব। একই সঙ্গে তিনি বলেন, বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি, এনআরসি ও কোচবিহারের বাসিন্দা উত্তমকুমার ব্রজবাসীকে অনুপ্রবেশকারী তকমা দেওয়া প্রভৃতির প্রতিবাদে উত্তরবঙ্গজুড়ে হবে গণ আন্দোলন। আগামীকাল, শনিবার শিলিগুড়িতে হবে মহামিছিল। পাল্টা উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। উভয়পক্ষের এমন বাকবিতণ্ডা ঘিরে স্থানীয় রাজনীতিতে উত্তজনার পারদ চড়ছে।
উত্তরবঙ্গ তো বটেই রাজ্যে শান্ত শহরগুলির মধ্যে শিলিগুড়ি অন্যতম। এই শহরে রাজনৈতিক হানাহানির ঘটনা নেই বললেই চলে। ইদানিং এই শহর ও গ্রামীণ এলাকায় ছোট ছোট কিছু ঘটনা নিয়ে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে এ ব্যাপারে বিজেপির বিরুদ্ধে গর্জে ওঠেন মেয়র। তিনি বলেন, রাজ্যে পালাবদলের পর থেকে এই শহরের উন্নয়নের পালে হাওয়া লেগেছে। রাস্তা, বিদ্যুৎ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য প্রভৃতির পরিকাঠামো উন্নয়ন, শিল্পস্থাপন জোরকদমে চলছে। এসব নিয়ে রাজনীতি করতে গেলে দশ গোল খাবে বিজেপি। তাই ওরা এখানকার মাটিতে বিভাজনের রাজনীতি কায়েম করতে চাইছে। এজন্য ছোট ছোট ঘটনায় রাজনীতির রং চাপিয়ে শান্ত শিলিগুড়িকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে। এর বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাব।
এদিন শহরে দলের জেলা পার্টি অফিস বিধানভবনে বৈঠক করে তৃণমূল। বৈঠকে মেয়র ছাড়াও দলের দার্জিলিং জেলা চেয়ারম্যান (সমতল) সঞ্জয় টিবরেওয়াল, দলের রাজ্য নেতা অলোক চক্রবর্তী, ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার সহ প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলার ও দলের কর্মীরা ছিলেন। কয়েকদিন আগে কোচবিহার জেলার দিনহাটার বাসিন্দা উত্তমকুমারকে অনুপ্রবেশকারী তকমা দিয়ে নোটিস পাঠিয়েছে বিজেপি শাসিত অসম সরকার। ইতিমধ্যে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এনিয়ে সরব হয়েছেন।
এছাড়া শিলিগুড়িতে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ঘিরে দু’টি পাড়ার মধ্যে গোলমাল হয়েছে। কিছুদিন আগে শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে, এসএফ রোডে, খড়িবাড়িতে বিক্ষিপ্ত কিছু অশান্তির ঘটনা ঘটে। বৈঠকে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলি নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। আগামী শনিবার শহরে মহামিছিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মেয়র বলেন, উত্তমকুমারকে অনুপ্রবেশকারী তকমা দেওয়া, এনআরসি চালুর চেষ্টা এবং বিভাজনের রাজনীতির প্রতিবাদে ওই মহামিছিল হবে। বাঘাযতীন পার্কে জমায়েত করা হবে। হিলকার্ট রোড ধরে মহাত্মা গান্ধী মোড় পর্যন্ত মিছিলটি যাবে। সর্বধর্মের মানুষ শামিল হবে।
পাল্টা বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা কমিটির সভাপতি অরুণ মণ্ডল বলেন, শহরের উন্নয়নে ব্যর্থ মেয়র। এখানে রাস্তা, পানীয় জল সহ বিভিন্ন প্রকল্প কেন্দ্রীয় টাকায় হচ্ছে। তবে শহরে চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, এটিএম লুট প্রভৃতির মতো ঘটনা ঘটছে। এসব ক্ষেত্রে উন্নয়ন হয়েছে। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে বিজেপির বিরুদ্ধে মিথ্যা গল্প বানাচ্ছে তৃণমূল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন