নয়াদিল্লি: জারি হয়ে গেল সেন্সাস-বিজ্ঞপ্তি। আর সেইসঙ্গে শুরু হয়ে গেল জনগণনার প্রক্রিয়াও। প্রথম ধাপে হাউজ লিস্টিং। তারপর পপুলেশন ইনিউমারেশন। সবটাই ডিজিটাল। তবে সেন্সাসের এই পর্বে নতুন সংযোজন অবশ্যই সাধারণ মানুষের ভূমিকা। কারণ, জনগণনা কর্মীর অপেক্ষায় না থেকে, কোনও নাগরিক মনে করলে বাড়ি বসেই আপলোড করতে পারবেন সেন্সাস-তথ্য। রেজিস্ট্রার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার (আরজিআই) নির্দিষ্ট একটি পোর্টাল বা অ্যাপে। এর ফলে বাড়ির সদস্য সংখ্যা এবং তাঁদের বিস্তারিত তথ্য যেমন নথিভুক্ত করা যাবে, তেমনই পরিবারের কেউ মারা গেলে বা ঠিকানা বদল করলে সেই নাম তালিকা থেকে বাদও দেওয়া যাবে।
সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের জারি করা গেজেট নোটিফিকেশনে ২০২৭ সালের ১ মার্চকে সেন্সাসের ‘রেফারেন্স’ তারিখ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ ওই তারিখে দাঁড়িয়ে (অ্যাজ অন) ভারতের জনসংখ্যা কত? তবে এর মধ্যে লাদাখ ও জম্মু-কাশ্মীরের তুষারাবৃত অংশ, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশকে রাখা হয়নি। এই চারটি ক্ষেত্রে জনগণনার ‘রেফারেন্স ডেট’ ধরা হয়েছে ২০২৬ সালের ১ অক্টোবরকে। আরজিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে যখন ‘আদমশুমারি’ চলবে, তার আগেই বিশেষ পোর্টাল বা অ্যাপের ব্যবস্থাপনা জানিয়ে দেবে সরকার। তার ভিত্তিতে ঘরে বসেই অনলাইনে নিজের তথ্য আপলোড করতে পারবেন ভারতীয় নাগরিকরা। পরে যখন জনগণনা কর্মী ওই ব্যক্তির বাড়িতে যাবেন, তাঁকে ‘অ্যাকনলেজমেন্ট আইডি’ জানাতে হবে। আধিকারিকরা মিলিয়ে দেখে নেবেন, প্রকৃত তথ্য আপলোড হয়েছে কি না। কিন্তু কেন এই সিদ্ধান্ত? সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হচ্ছে, জনগণনার সময় বাঁচাতে। ৩৪ লক্ষ জনগণনা কর্মী এবং ১ লক্ষ ৩০ হাজার সেন্সাসের সঙ্গে জড়িত আধিকারিক গণনার কাজে যুক্ত থাকবেন ঠিকই, কিন্তু সাধারণ মানুষ নিজে থেকে এগিয়ে এলে এই বিপুল কর্মকাণ্ড আরও সহজ হবে।
২০২৬ সালের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হবে হাউজ লিস্টিং। অর্থাৎ, দেশে বাড়ির সংখ্যা কত, কার বাড়িতে ক’টি ঘর ইত্যাদি। তারপর হবে পপুলেশন ইনিউমারেশন। সেখানেই প্রতিটি ব্যক্তির বিস্তারিত তথ্য সরকারি সার্ভারে উঠবে। সম্পূর্ণ ডেটা চূড়ান্ত হবে ২০২৭ সালের মার্চের শেষ অথবা এপ্রিলে। জনসংখ্যা বিবেচিত হবে ১ মার্চ ২০২৭ মোতাবেক।
স্বাধীন ভারতের অষ্টম জনগণনা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, ঘোষণার পরও কেন বিজ্ঞপ্তিতে কাস্ট সেন্সাস বা জাতিগণনার উল্লেখ নেই? কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ এদিন বলেন, ‘কংগ্রেসের লাগাতার দাবির কাছে নরেন্দ্র মোদি মাথানত করে জানিয়েছিলেন, এবার জনগণনায় জাতির বিষয়টি যুক্ত হবে। গত ৩০ এপ্রিল এ ব্যাপারে ঘোষণাও হয়েছিল। কিন্তু গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে তার উল্লেখই নেই! তবে কি পরে জানানো হবে? নাকি ইউ-টার্ন নেওয়া ওস্তাদের এটি ফের ইউ-টার্ন?’ জনগণনায় কংগ্রেস শাসিত তেলেঙ্গানা মডেল অনুসরণ করারই পরামর্শ দিয়েছেন জয়রাম। তবে উল্লেখ করা যায়, গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে বলা না হলেও গত ৪ জুন প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরোর জারি করা বিবৃতিতে সেন্সাসে সব ভারতীয়ের জাতি ‘যুক্ত’ করা হবে বলেই জানানো হয়েছিল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন