নয়াদিল্লি: বিরোধী রাজনৈতিক নেতানেত্রী, বিচারপতিদের মোবাইলে যদি ‘পেগাগাস’ স্পাইওয়ার ঢুকিয়ে আড়ি পাততে পারেন নরেন্দ্র মোদি, তাহলে পহেলগাঁও হামলার জঙ্গিদের ক্ষেত্রে কেন পারলেন না? ৩৩ দেশে সরকারি সর্বদল প্রতিনিধি পাঠানোর পরেও কেন এখনও পর্যন্ত কোনও দেশ পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদী দেশ তকমা দিয়ে ভারতের পাশে দাঁড়াল না? বিদেশ মন্ত্রক গত ১০ বছরে দু’ লক্ষ কোটি টাকা নানাভাবে খরচ করে কোথায় সফল বিদেশনীতিতে? পাক অধিকৃত কাশ্মীর ছিনিয়ে আনার সুযোগ ছেড়ে সংঘর্ষবিরতি কেন? এরকম একগুচ্ছ প্রশ্ন ছুড়ে সোমবার মোদি সরকারকে বিদ্ধ করলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার পর ৫৫ দিন কেটে গেলেও কেন এখনও ধরা পড়ল না হত্যাকারী সেই চার জঙ্গি? এদিন সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সওয়ালের সঙ্গে প্রশ্নের ‘পঞ্চবাণ’ ছুঁড়লেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদি সরকারের বিদেশে পাঠানো সাত প্রতিনিধিদলের একটিতে ছিলেন তিনি। কিন্তু সেই সফরের সার্থকতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন নিজেই। মোদি সরকারে কাছে তাঁর প্রশ্ন, এতো বিশ্ব কূটনীতিতে দ্বিচারিতা। মোদি নিজেকে বিশ্বগুরু বলেন। অথচ একটিও দেশ কেন পাকিস্তান ইস্যুতে ভারতের পাশে দাঁড়াল না? উল্টে পাকিস্তানকে রাষ্ট্রসঙ্ঘে বিশেষ সম্মানীয় পদ দেওয়া হচ্ছে। তাই আর নয়, এবার মোদিকে জবাব দিতেই হবে বলে সোচ্চার হলেন অভিষেক।
অভিষেকের দাবি জোরদার করতে সকাল থেকে পরের পর ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে একে একে কাকলি ঘোষদস্তিদার, মহুয়া মৈত্র, সুস্মিতা দেব, কীর্তি আজাদ, সাকেত গোখলে, রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা সরব হলেন। প্রশ্ন তুললেন, পাকিস্তানকে শিক্ষা দিতে অ্যাকশন প্ল্যান কি? নাকি এটাও জুমলা? দলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের মন্তব্য, বিরোধীদের দাবি মেনে মোদি সরকার তো পহেলগাঁও ইস্যুতে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকছেই না। সরকার জবাবদিহির হাত থেকে পালাচ্ছে। তবে আর নয়। পহেলগাঁও হামলার ৫৫ দিন পার, এবার তো প্রধানমন্ত্রীকে জবাব দিতেই হবে।
পহেলগাঁওয়ের আঘাতের রেশ না মিটতেই কয়েকদিন আগে গুজরাতে ঘটেছে এয়ার ইন্ডিয়ার ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা। মহারাষ্ট্রে ভেঙে পড়ল সেতু। গত কয়েকদিনে বিভিন্ন জায়গায় ভেঙে পড়েছে পাঁচ হেলিকপ্টার। অথচ নরেন্দ্র মোদি বিদেশ যাত্রায় সিনেম্যাটিক ভিডিও দিচ্ছেন বলেই তৃণমূলের অভিযোগ। তাই সার্বিকভাবে দলের পক্ষ থেকে প্রশ্ন তোলা হল, গোটা দেশ যখন গভীর শোকের আবহে রয়েছে, তখন প্রধানমন্ত্রী প্রচারমন্ত্রীর মতো আচরণ করছেন। নিজেকে অ্যাকশন হিরোর মতো কল্পনার জগতে রয়েছেন। এই কি বিপদের দিনে একজন নেতার কাজ?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন