
কলকাতা: অফিসে কাজ করছেন। প্রচণ্ড ব্যস্ততার মধ্যেই ফোনের নোটিফিকেশন অ্যালার্ট বেজে উঠল। হোয়াটসঅ্যাপে একটি ছবি এসেছে। আবছাতে অক্ষরগুলি বোঝা যাচ্ছিল— ‘নববর্ষ’। বাংলা নতুন বছরের শুভেচ্ছাবার্তা ভেবেই ছবিটি ডাউনলোড করেন ৫৩ বছরের প্রৌঢ় মণীন্দ্র শাসমল (নাম পরিবর্তিত)। ছবি দেখে ‘রিপ্লাই’ও দেন তিনি। ব্যস! এই যথেষ্ট। পাঁচ মিনিটের মধ্যে মোবাইলের পর্দায় ভেসে উঠল তিনটি মেসেজ। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ৫০ হাজার টাকা করে ডেবিট হয়ে গিয়েছে। সাকুল্যে গায়েব দেড় লক্ষ টাকা।
অজ্ঞাত হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে আসা ছবি ডাউনলোড করলেই ফোন প্রবেশ করবে হ্যাকার অ্যাপ। যে অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাহকের ফোনের যাবতীয় তথ্য, ফোন নম্বর, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিভিন্ন নথি চুরি করে নেবে প্রতারকরা। সম্প্রতি হোয়াটসঅ্যাপে ছবি বা ভিডিও পাঠিয়ে নয়া সাইবার প্রতারণার ফন্দি এঁটেছে জালিয়াতরা। এনিয়ে ইতিমধ্যে সতর্কবার্তা দিচ্ছে পুলিস ও রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কগুলি। সাইবার বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, হোয়াটসঅ্যাপে যে ছবি আসছে, তার সঙ্গেই রয়েছে ম্যালওয়ার। যা তথ্য চুরির কাজে লাগে। অজ্ঞাত নম্বর থেকে আসা সেই ছবি বা ভিডিও ডাউনলোড করলেই সেই ম্যালওয়ার ফোনের সফটওয়ার সিস্টেমে ঢুকে পড়ছে। যার ফলে ফোনের ইন-বিল্ট ইন্টারনেট সিকিওরিটি সিস্টেমটিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে সেই ম্যালওয়ার।
সেই ম্যালওয়ার ও গ্রাহকের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরকে কাজে লাগিয়ে প্রতারণায় নামছে জালিয়াতরা। ছবির সঙ্গে লিঙ্ক করে দেওয়া হয়েছে হ্যাকার অ্যাপ। ছবি ডাউনলোড করলেই নিজে থেকে গ্রাহকের ফোনে ডাউনলোড হয়ে যাবে সেই অ্যাপটি। এই অ্যাপ গ্রাহকের মোবাইলে থাকলেই সম্পূর্ণ কন্ট্রোল চলে যাবে প্রতারকের হাতে। এরপরেই ফোনে থাকা ইউপিআই অ্যাকাউন্টের যাবতীয় তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে তারা। কোপ পড়ছে গ্রাহকের জমানো পুঁজিতে। সেক্ষেত্রে কীভাবে মুক্তি পাওয়া যাবে এই প্রতারণার হাত থেকে? পুলিসের সাইবার বিভাগ জানাচ্ছে, ফোনের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্টের সেটিংস থেকে অটো ডাউনলোড বন্ধ করে রাখতে হবে। অপরিচিত নম্বর থেকে কোনও ছবি বা ভিডিও এলে তা ডাউনলোড না করার নির্দেশ দিচ্ছে দেশের প্রথম সারির রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষগুলি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন