
মাঝেমধ্যেই সংবাদ শিরোনামে উঠে আসে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকার নাম। লাদাখে ভারত-চীন সীমান্তে এই গালওয়ান উপত্যকা ঘিরেই উত্তপ্ত হয়েছে ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি। সামরিক ও বাণিজ্যিক দুই ক্ষেত্রেই গালওয়ান একটি গুরুত্বপূর্ণ করিডর। তবে শুধু আজ না, এই অঞ্চলের উপর প্রভাব বিস্তারের জন্য দ্বন্দ্বের ইতিহাস শতাব্দী প্রাচীন। সেই ইতিহাসেই লুকিয়ে আছে এখানকার নামকরণ।
এই উপত্যকার নামকরণ করা হয়েছিল লাদাখি এক অভিযাত্রী এবং অনুসন্ধানকারী গুলাম রসুল গালওয়ানের নামে। ব্রিটিশ অধিকৃত লাদাখে তখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে দারিদ্র্যের ছাপ। পরিবারের আর্থিক অবস্থার সামাল দিতে মাত্র ১২ বছর বয়সেই নামলেন শ্রমিকের কাজে। ১৮৯২ সালে একটি ঘটনায় মোড় ঘুরে যায় তাঁর জীবনে। সুযোগ আসে পথপ্রদর্শক হয়ে সঙ্গ দেওয়ার একটি ব্রিটিশ দলের অভিযানে। চার্লস মারে ও ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর এক লেফটেন্যান্টের অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল আজকের গালওয়ান নদীর উৎস খুঁজে বের করা এবং সমগ্র অঞ্চলের মানচিত্র তৈরি করা। তবে তখনও সেই নদীর নাম গালওয়ান হয়নি। তা কেবল শিয়ক নদীর একটি উপনদী হিসেবেই পরিচিত ছিল।
দুর্গম প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য অভিযানে নাভিশ্বাস ছুটে গিয়েছিল ব্রিটিশ দলটির। দুরূহ গিরিখাত, সংকীর্ণ উপত্যকায় মোড়া রাস্তা গোলকধাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাঁদের কাছে। তবে হাল ছাড়েননি ১৪ বছর বয়সি ছোট্ট কিশোর গালওয়ান। একক প্রচেষ্টায় খুঁজে বার করেন একটি পথ। যে রাস্তা গিয়ে পৌঁছয় সেই নদীর কাছে। গালওয়ানের দক্ষতায় মুগ্ধ হয়েছিলেন চার্লস মারে। তাঁর নামেই মানচিত্রে তিনি সেই খরস্রোতা নদীর নামকরণ করেন ‘গালওয়ান নালা’। পাশাপাশি উপত্যকাটির নাম দেওয়া হয় ‘গালওয়ান ভ্যালি’।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন