
নয়াদিল্লি: পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার জেরে ভারতের প্রত্যাঘাতের আশঙ্কায় কাঁপছে পাকিস্তান। তার মধ্যেই সেদেশে গৃহযুদ্ধের অশনি সঙ্কেত। জাফর এক্সপ্রেসে হামলার দু’মাস কাটার আগেই ফের হামলা চালাল বালোচ বিদ্রোহীরা। অশান্ত বালুচিস্তান প্রদেশের পুরো একটি শহরই কার্যত কব্জা করে নিয়েছে তারা। সূত্রের খবর, বালুচিস্তানের কালাত জেলার মঙ্গোচের শহরে হামলা চালায় বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। সরকারি কার্যালয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পণবন্দি করা হয়েছে পাক সেনার সদস্যদের। সেনার অস্ত্রও লুট করে নিয়েছে বিদ্রোহীরা। কয়েক ঘণ্টা বিদ্রোহীদের দখলে চলে যায় কোয়েটা-করাচি হাইওয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ সড়ক।
সূত্রের খবর, রাস্তার
সমস্ত গাড়ি দাঁড় করিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। চালকদের সঙ্গে পাক সরকার বা
সেনার কোনও যোগ পাওয়া গেলেই তাদের আটক করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই বালুচিস্তানের
প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জিয়া লাঙ্গোভের চারজন নিরাপত্তা রক্ষীর প্রাণ
গিয়েছে বিদ্রোহীদের গুলিতে। বিদ্রোহীদের অভিযোগ, পাকিস্তানি সেনা ও গুপ্তচর
সংস্থা আইএসআইয়ের মধ্যে সংযোগের কাজ করছিলেন জিয়া। এদিন বিদ্রোহীরা আব্দুল
কুদ্দুসকেও গ্রেপ্তার করে। পাক সেনার হয়ে নানা বিষয়ে আলোচনা চালাতেন তিনি।
বিএলএ বহুদিন ধরে তাঁকে ওয়ান্টেড বলে ঘোষণা করেছিল।
গত ২৮ এপ্রিল পাসনি
এলাকায় মহম্মদ নওয়াজ নামে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের এক এজেন্টকে খুন
করে বিএলএ। পরিচয় লুকিয়ে বিদ্রোহীদের ডেথ স্কোয়াডের হয়ে কাজ করতেন নওয়াজ।
তারপর থেকেই নতুন করে বিএলএর সঙ্গে সংঘাতে জড়ায় ইসলামাবাদ। কোয়েটা থেকে
প্রায় ১০০ কিমি দূরে অবস্থিত মঙ্গোচের শহর। সূত্রের খবর, শুক্রবার সন্ধ্যায়
সেখানে হামলা চালায় একদল মুখোশধারী বিদ্রোহী। প্রথমেই তারা হাইওয়ে অবরোধ
করে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, একদল বিদ্রোহী
গাড়ি পরীক্ষা শুরু করে। অন্য একটি দল মঙ্গোচের বাজারে ঢুকে পড়ে সরকারি
কার্যালয়গুলিকে টার্গেট করে। একাধিক ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, বিদ্রোহীরা
অস্ত্র হাতে সরকারি কার্যালয়ের ছাদে দাঁড়িয়ে। রাস্তায় গাড়ির লম্বা লাইনও
ভিডিওতে দেখা গিয়েছে। যদিও সেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি ‘বর্তমান’। এখনও
পর্যন্ত ইসলামাবাদের তরফে এই হামলা নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।স্বাধীন
বালুচিস্তানের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে বিএলএ।
চলতি বছরের মার্চেই কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী জাফর এক্সপ্রেস হাইজ্যাক করে
বিদ্রোহীরা। দু’দিন ধরে গোটা ট্রেন দখল করে রাখে তারা। ঘটনায় শতাধিক পাক
সেনা ও আধাসেনা এবং আইএসআই সদস্যের মৃত্যু হয়েছিল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন