
কলকাতা: প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার মাধ্যমে আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা মানুষের বাড়িতেও গ্যাসের আগুনে রান্নার স্বপ্ন দেখিয়ে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু কেন্দ্রের সমীক্ষাই বলছে, তারপরেও দেশের প্রায় ৩০ শতাংশ পরিবার রান্নার জন্য শুকনো কাঠ বা খড়কুটো ব্যবহার করছে। বাংলায় কেন্দ্রের এই প্রকল্প তেমন একটা ছাপ ফেলতে পারেনি বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, ২০২৪ সালে এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেওয়া ৭৫ লক্ষ গ্যাস সংযোগের একটিও পায়নি বাংলার মানুষ। বর্তমানে এ রাজ্যে এলপিজি সংযোগের সংখ্যা ২ কোটি ৭০ লক্ষ ৯০ হাজার। এর মধ্যে উজ্জ্বলা যোজনার অধীনে থাকা সংযোগের সংখ্যা ১ কোটি ২৩ লক্ষ ৭৫ হাজার। তবে শুধু এই সংখ্যা দেখে সমাজের আর্থসামাজিক অবস্থা বোঝা দুষ্কর। সেক্ষেত্রে দেখা দরকার, সংযোগ থাকা সত্ত্বেও ব্যবহার হচ্ছে না, এমন পরিবারের সংখ্যা কত। এবার সেই সমীক্ষাতেই নামল রাজ্য সরকার। কতগুলি বাড়িতে বছরে অন্তত দু’টি এলপিজি সিলিন্ডার ব্যবহার হয়, আর্থসামাজিক পরিস্থিতির মূল্যায়নে তা খতিয়ে দেখবে রাজ্য। তাই কোনও গ্রাম পঞ্চায়েতে শ্রমদিবস সৃষ্টি, নিজস্ব আয় বৃদ্ধি, বার্ধক্য ভাতা প্রাপকের সংখ্যা, কতগুলি বাড়িতে পরিস্রুত পানীয় জল যাচ্ছে ইত্যাদি পরিসংখ্যানের পাশাপাশি এলপিজি ব্যবহার সংক্রান্ত তথ্যও চেয়ে পাঠাল নবান্ন। এই মর্মে ইতিমধ্যে জেলাশাসকদের চিঠি পাঠিয়েছে পঞ্চায়েত দপ্তর। তথ্য সংগ্রহের পর নির্দিষ্ট গুগল স্প্রেডশিটে তা তথ্য দ্রুত তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছ। জেলাশাসকদের দেওয়া চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এই মূল্যায়নের ভিত্তিতেই আগামী দিনে কোন খাতে বেশি অর্থ বরাদ্দ প্রয়োজন, তা নির্ধারণ করা হবে। সেই মতো সুপারিশ করবে ষষ্ঠ রাজ্য অর্থ কমিশন।
চলতি অর্থবর্ষেই শেষ
হচ্ছে পঞ্চম অর্থ কমিশনের মেয়াদ। ইতিমধ্যে প্রাক্তন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ
দ্বিবেদীকে মাথায় রেখে গঠিত হয়েছে ষষ্ঠ রাজ্য অর্থ কমিশন। তাদের সুপারিশ
মেনেই ২০২৬-২৭ অর্থবর্ষ থেকে বিভিন্ন দপ্তরকে পরিকাঠামো উন্নয়ন খাতে বিশেষ
আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে নবান্ন। সেই সুপারিশের জন্যই বর্তমানে রাজ্যের
আর্থসামাজিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সঠিক তথ্য থাকা জরুরি। পঞ্চম অর্থ কমিশন
লাগু হওয়ার আগেও এমন সমীক্ষা হয়েছিল। কিন্তু, রান্নার গ্যাস এবং ‘ক্লিন
ফুয়েল’ ব্যবহার সংক্রান্ত সমীক্ষা এই প্রথম করা হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন
রাজ্যের এক পদস্থ কর্তা। জেলাশাসকদের দেওয়া চিঠিতে রান্নার গ্যাসের
ব্যবহার ছাড়া আরও সাতটি সূচকের কথা বলা হয়েছে। যেমন, ট্রেড লাইসেন্স
সংক্রান্ত তথ্য। গত তিন বছরে একটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কতগুলি ট্রেড
লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, তা জানাতে হবে। কতগুলি পরিবারকে ‘রুরাল
এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি’র অধীনে আনা হয়েছে, সেই তথ্যও দিতে হবে বলে
জানিয়েছে রাজ্য।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন