
কলকাতা: রেশন গ্রাহকদের আধার সংযুক্তিকরণের কাজ কম হয়েছে রাজ্যের এমন কয়েকটি এলাকা চিহ্ণিত করেছে খাদ্য দপ্তর। সব কটি জায়গা উত্তরববঙ্গে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত। খাদ্য দপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী উত্তর দিনাজপুর জেলার গোয়ালপোখর-১,করণদিঘি ও ইসলামপুর এবং কোচবিহারের দিনহাটা ব্লক এলাকা এর মধ্যে রয়েছে বলে জানানো হয়েছে। মহকুমা খাদ্য নিয়ামকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ওই সব এলাকার পরিদর্শনের জন্য বিশেষ টিম গঠন করতে হবে। খাদ্য দপ্তরের রিফর্ম সেল এব্যাপারে বিশেষ নির্দেশিকা জাজর করবে। সম্প্রতি খাদ্যশ্রী ভবনে পর্যালোচনা বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সব জেলার খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যুক্ত ছিলেন।
খাদ্য দপ্তরের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী রাজ্যে এখন রেশন গ্রাহকের সংখ্যা ৮ কোটি ৭০ লক্ষ২৩ হাজার জন। এর মধ্যে ৮ কোটি ৫৭ লক্ষ ৪১ হাজার ২৬৭ জন গ্রাহকের আধার নম্বর সংযুক্তিকরণ করা হয়েছে। প্রায় ১৩ লক্ষ রেশন গ্রাহকের আধার নম্বর সংযুক্ত করা হয়নি। প্রায় ৯৫ শতাংশ রেশন গ্রাহকের আধার নম্বরের বায়োমেট্রিক যাচাই করে ই-কেওয়াইসি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। গোটা দেশে এব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের থেকে মাত্র দুটি রাজ্য সামান্য এগিয়ে আছে।
পশ্চিমবঙ্গে রেশনে খাদ্য দেওয়ার প্রক্রিয়ার ৯৯ শতাংশের বেশি গ্রাহকের আধার নম্বরের বায়োমেট্রিক যাচাই করার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। যে পরিবারে কোনও গ্রাহকের আধার নম্বর দেওয়া নেই বা বায়োমেট্রিক যাচাই হয়নি সেই পরিবারের এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া কোনও সদস্য সবার খাদ্য সংগ্রহ করতে পারতেন। কিন্তু এখন খাদ্য দপ্তর অনেক ক্ষেত্রে আধার নম্বর না থাকা বা থাকলেও সেটির বায়োমেট্রিক যাচাই না হলে সেই কার্ডগুলি সাময়িকভাবে ব্লক করে দিচ্ছে। ব্লক কার্ডে খাদ্য বরাদ্দ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
তবে গ্রাহক কোনও সমস্যার জন্য আধার নম্বর করতে পারেননি বা আধার থাকলেও তার বায়োমেট্রিক যাচাই করা সম্ভব হয়নি এমন কেসও অনেক আছে। এই ধরনের কেসগুলির ক্ষেত্রে যাতে প্রকৃত কোনও রেশন গ্রাহক খাদ্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত না হন সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন। এই ধরনের গ্রাহকদের জন্য বিকল্প কিছু ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
কিন্ত রেশন বণ্টন ব্যবস্থায় একশো শতাংশ স্বচ্ছতা আনতে আধার সংযুক্তিকরণ ও তার বায়োমেট্রিক যাচাইয়ের উপর রাজ্য খাদ্য দপ্তর বিশেষ জোর দিয়েছে। প্রতিটি পর্যালোচনা বৈঠকে এনিয়ে বিশেষ আলোচনা হয়। কেন্দ্রীয় সরকার আধার সংযুক্তিকরণের জন্য সময়সীমা আগামী জুন পর্যন্ত বাড়িয়েছে। এই সময়সীমা গত কয়েক বছর ধরে বাড়ানো হচ্ছে। আধার না থাকলে রেশন কার্ড পুরোপুরি বাতিল হয়ে যাবে এরকম কোনও নির্দেশএখনও দেওয়া হয়নি। তবে গ্রাহকদের আধার থাকা উপর কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষ জোর দিয়েছে। একশো শতাংশ গ্রাহকের আধার নম্বরের বায়োমেট্রিক যাচাই না হলে এপ্রিল মাসের পর রাজ্যগুলির খাদ্য খাতে ভর্তুকি বা খাদ্য বরাদ্দ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন