
কলকাতা: কলকাতা বন্দরের জাহাজগুলি এখন থেকে রাতেও হুগলি নদী দিয়ে যাতায়াত করতে পারবে। শুক্রবার রাতেই বজবজ থেকে একটি কন্টেনারবাহী জাহাজ আট হাজার টন পণ্য নিয়ে স্যান্ডহেড হয়ে গভীর সমুদ্রে গিয়েছে। শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি পোর্ট (এসএমপি) কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রাতে হুগলি নদী দিয়ে জাহাজ চলাচল করতে না পারা কলকাতা বন্দরের জন্য একটি বড় প্রতিবন্ধতা ছিল। অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে সেই বাধা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। চেন্নাই আইআইটি’র ন্যাশনাল টেকনোলজিক্যাল সেন্টার ফর পোর্টস ও বেলজিয়ামের অ্যান্টেয়াপ বন্দর কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে রাতের বেলা জাহাজ চলাচল চালু করতে সময় লাগল কয়েক বছর। খরচ হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা। এসএমপি’র চেয়ারম্যান রথেন্দ্র রমন জানিয়েছেন, এর ফলে কলকাতা বন্দরে জাহাজ চলাচল ব্যবস্থা অনেক উন্নত হবে।
বন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা বন্দর থেকে স্যান্ডহেডে গভীর
সমুদ্রে পৌঁছনর জন্য জাহাজকে হুগলি নদীর চ্যানেল দিয়ে ২৩২ কিলোমিটার জলপথ
অতিক্রম করতে হয়। এই নদীপথে অনেকগুলি বাঁক ও অগভীর অংশ সহ বিভিন্ন সমস্যা
আছে। এর মধ্যে কলকাতা থেকে নুরপুর পর্যন্ত ৩২ নটিক্যাল মাইল অংশে জাহাজ
চালানো খুবই কঠিন। কারণ, এই অংশে আট জায়গায় জাহাজ যাওয়ার চ্যানেল নদীর
একদিক থেকে অন্য দিকে সরে যায়। বন্দরের দক্ষ ও অভিজ্ঞ পাইলটরাই এই অংশে
জাহাজ চালিয়ে নিয়ে যান। স্যান্ডহেডে পৌঁছনর পর জাহাজের ক্যাপ্টেন দায়িত্ব
গ্রহণ করেন। এই নদীপথে এত বেশি ঝুঁকি থাকার কারণে রাতের বেলা জাহাজ
চালানো যেত না। এখন প্রযুক্তির সাহায্যে নদীতে আলো লাগানোর পাশাপাশি বেশ
কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করায় সেই সমস্যা মিটেছে বলেই খবর।
১৫০ বছর আগে কলকাতা বন্দর চালু হওয়ার সময় থেকেই রাতে হুগলি নদী দিয়ে জাহাজ চলাচল করত না। এসএমপি’র মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এতদিন কলকাতা বন্দরে জাহাজ প্রবেশ ও বের করার জন্য দিনের বেলার জোয়ারের উপর নির্ভর করতে হতো। জাহাজ বেশি সময় বন্দরে থাকতে বাধ্য হওয়ায় পণ্য পরিবহনের খরচও বাড়ত। এবার সেসব বাধা কাটবে বলেই আশা আধিকারিকদের।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন