
কলকাতা: আতঙ্কের আধঘন্টা! আধ ঝুলন্ত অবস্থায় কার্নিশে দাঁড়িয়ে কার্যত মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়া! এরকম আতঙ্ক কারও জীবনে যেন কোনওদিন না আসে, ভয়ে কেঁপে উঠে বললেন ওড়িশার নেহা আগরওয়াল।
মঙ্গলবার রাতে বড়বাজারের চিৎপুরে হোটেলে আচমকা বিধ্বংসী আগুন। ঘরে বন্দি নেহারা। চারদিক ঘন ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন। রুম থেকে বের হওয়া অসম্ভব। সে অবস্থায় কাঁপতে কাঁপতে নেহা ও তাঁর স্বামী আকাশ, এক ভাইপোকে নিয়ে হোটেল রুমের জানলার কার্নিশে দাঁড়িয়ে। এ অবস্থায় কাটে পাক্কা আধ ঘণ্টা। কিছুক্ষণ পর দমকল আসে। ফলে প্রাণে বাঁচেন তাঁরা। মঙ্গলবার হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে ওড়িশায় ফিরে যাওয়ার কথা। আগুনের কবলে পড়ার পর ট্রেনের সময় পেরিয়ে যায়। ফেরা হয়নি। বুধবার সকাল থেকে ওই চত্বরেই বসে রয়েছেন। নিজেরা চেষ্টা করছেন আর পুলিসকেও অনুরোধ করছেন, ট্রেনের টিকিটের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য।
নিজেদের দুই পুত্র সন্তান ও দুই ভাইপোকে
নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন নেহা ও আকাশ আগরওয়াল। উঠেছিলেন চিৎপুরের ওই হোটেলে।
নেহাদেবী বুধবার বলেন, ‘হোটেল থেকে চেকআউট করে ফেলেছিলাম। বড় ভাইপো আমার
দুই ছেলেকে নিয়ে লাগেজ সমেত হোটেলের বাইরে দাঁড়িয়ে। আমি, আকাশ ও এক ভাইপো
বিল দিচ্ছিলাম। কিছু ফেলে গেলাম কি না দেখার জন্য রুমটা একবার চেক করে
নিচ্ছি। আচমকা ছেলে আমাকে ফোন করে বলে, মা আগুন লেগেছে। দরজা খুলে দেখি
বাইরেটা ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে।’ তিনি জানান, দড়াম করে দরজা বন্ধ করে জানলার
কাছে চলে যান তাঁরা। কাচ ভাঙেন। তারপর জানলা টপকে বেরিয়ে প্রাণ হাতে
কার্নিশে নামেন তিনজন। নেহা বলেন, ‘দেওয়াল আঁকড়ে ধরে দাঁড়িয়ে প্রায়
দুলছিলাম। তারস্বরে চিৎকার করতে থাকি। এক মিনিট মনে হচ্ছিল এক ঘণ্টা। মনে
হচ্ছিল পড়েই যাব।’ এভাবে প্রায় আধঘণ্টা। তারপর দেবদূতের মতো আসেন দমকল
কর্মীরা। ক্রেন লাগিয়ে কার্নিশ থেকে নামান তিনজনকে। রক্ষা পায় তিনটি প্রাণ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন