মালদা: ৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধাকে মুর্শিদাবাদ থেকে মালদহ শহরের রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল ছেলেদের বিরুদ্ধে। আর ওই বৃদ্ধাকে রাস্তায় কান্নাকাটি করতে দেখে এগিয়ে এলেন ইংরেজবাজারের এক তৃণমূল নেতা প্রসেনজিৎ দাস। তড়িঘড়ি ওই বৃদ্ধাকে আশ্রয় এর জন্য সংস্কৃতি পুরসত্তর অধীনস্থ একটি বৃদ্ধাশ্রমে থাকার ব্যবস্থা করলেন জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা আইনজীবী প্রসেনজিৎ দাস। তিনি বলেন, ‘ওই বৃদ্ধার মুখ থেকে সমস্ত ঘটনার কথা শুনেছি। তাঁর তিন ছেলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আদালতে মামলা রুজু করা হবে’।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ৮০ বছর বয়সী ওই বৃদ্ধার নাম শিবানী দাস। তাঁর বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি এলাকায়। এদিন সকালে মালদা শহরের একটি এলাকার রাস্তার ধারে অসহায় অবস্থায় কান্নাকাটি করছিলেন ওই বৃদ্ধা। সেই সময় মোটরসাইকেলে করে যাচ্ছিলেন ইংরেজবাজার পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক প্রসেনজিৎ দাস। ওই বৃদ্ধাকে দেখে তে পেয়ে এগিয়ে আসেন তিনি। এরপরেই ওই বৃদ্ধার সঙ্গে কথা বলে সমস্ত ঘটনার কথা জানতে পারেন। পাশাপাশি তৃণমূলের এই প্রাক্তন কাউন্সিলর তাঁর সহযোগীদের সাহায্য নিয়েই ওই বৃদ্ধাকে মালদা শহরের বাঁধরোড এলাকার একটি বৃদ্ধাশ্রমে থাকার ব্যবস্থা করে দেন।
বৃদ্ধা শিবানী দাস জানিয়েছেন, তার বাড়ি মুর্শিদাবাদের কান্দিতে। তার স্বামী সামান্য রোজগার করতেন। দীর্ঘদিন আগে তিনি মারা গিয়েছেন। বর্তমানে তাঁর তিন ছেলে, দুই মেয়ে রয়েছে। সকলেরই বিয়ে হয়ে গেছে। সংসারে নাতি নাতনিও রয়েছে। সম্প্রতি তিনি ছেলেদের নামে থাকা একটি পাকা বাড়ি বিক্রি করে দেয়। বাড়ি বিক্রির পর তাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়। নিজের রাস্তা নিজে দেখে নিতে বলে।
এরপরে দিন এক ছেলে, মালদায় ঘুরতে যাওয়ার নাম করে মুর্শিদাবাদ থেকে এখানে এনে ফেলে পালিয়ে যায়। যদিও ওই তৃণমূল নেতা সহযোগিতা পেয়ে কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন বৃদ্ধা শিবানী দাস।
তৃণমূলের জেলার সাধারণ সম্পাদক তথা মালদার গ্রন্থাগার সচিব প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক। চোখের সামনে এরকম একটি বৃদ্ধাকে অসহায় অবস্থায় থাকতে দেখে নিজেকে ঠিক রাখতে পারিনি। ওই বৃদ্ধাকে আপাতত ইংরেজবাজার পুরসভার অন্তর্গত বাঁধরোড এলাকার একটি বৃদ্ধাশ্রমে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। যদিও বয়সের ভারে ওই বৃদ্ধা সম্পূর্ণভাবে বাড়ির ঠিকানাটি বলতে পারছেন না। তবে তাঁর ছেলেদের নাম বলেছেন। কী ভাবে তাঁকে চালাকি করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে মালদায় নিয়ে আসা হয়েছিল, সে সম্পর্কেও জেনেছি। ওই বৃদ্ধার ছেলেদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চলছে। প্রয়োজনে ওই বৃদ্ধার ছেলেদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হবে’।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন