চন্দননগর: পানাগড়কাণ্ডে অবশেষে পুলিশের দাবিতে মেনে নিলেন মৃত সুতন্দ্রা চট্টোপাধ্যায়ের গাড়ির চালক। তাঁর দাবি, ‘ম্যাডাম’ই তাঁকে বাবুল যাদবের গাড়ির পিছনে ধাওয়া করতে বলেছিলেন। পিছু ধাওয়া করতে করতে তাঁদের গাড়ির গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের উঠে গিয়েছিল বলে দাবি করেছেন সুতন্দ্রা গাড়ির চালক। তাঁর বক্তব্য, গতিবেগ এতই বেশি ছিল যে, নিয়ন্ত্রণ হারিয়েই তাঁদের গাড়ি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এবং উল্টে যায়।
গত রবিবার রাতে পানাগড়ে গাড়ি দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে চন্দননগরের বাসিন্দা, একটি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সংস্থার কর্ণধার সুতন্দ্রা (২৯)-র। প্রাথমিক ভাবে অভিযোগ ওঠে, কয়েক জন মত্ত যুবক একটি সাদা গাড়িতে করে এসে সুতন্দ্রার নীল গাড়িটিকে বার বার ধাক্কা দেন। তার ফলেই উল্টে যায় সুতন্দ্রার গাড়ি। ঘটনাস্থলে মৃত্যু হয় সুতন্দ্রার। এই দাবি করেছিলেন ঘটনার সময় সুতন্দ্রার গাড়িতে থাকা সহকর্মীরা এবং গাড়ির চালক।
পরে সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে এলে পুলিশের দাবি করে, রেয়ার ভিউ কারের কারণে গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটেছিল পানাগড়ে। সুতন্দ্রার গাড়িকে বার বার ধাক্কা দেওয়ার অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে দেয় পুলিশ। পুলিশের দাবি ছিল, তরুণীর গাড়ির যুবকদের সাদা গাড়িটিকে তাড়া করছিল ওই রাতে। কয়েকটি সিসি ফুটেজেসুতন্দ্রার গাড়িকে যুবকদের গাড়ির পিছনে পিছনে যেতে দেখা গিয়েছে। সেই সময় সুতন্দ্রার গাড়ির গতিও বেশি ছিল।
সুতন্দ্রা মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই তাঁর দুই সহকর্মীর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে আদালতে। ওই সাদা গাড়ির চালক বাবুলকে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ। তার মধ্যেই সুতন্দ্রা গাড়ির চালকের বক্তব্যে শঙ্কা ও ভয় প্রকাশ পায়। ঘটনার দিন, রবিবার রাতে তৎকালীন কথাতে সাদা গাড়ির পিছনে ধাওয়া করেছিলেন তিনি। ঘটনার পাঁচ দিন পর চালকের বয়ান দিয়ে চালক রাজু বলেন, “ওই সাদা গাড়িটি আমাদের গাড়িতে প্রথমে ধাক্কা দিয়েছিল। তখন ম্যাডামই বলেছিল ওই গাড়িটার পিছনে ধাওয়া করতে। সাদা গাড়িটাকে দাঁড় করাতে বলেছিল ম্যাডাম। আমি সেই চেষ্টাই করছিলাম। এগিয়েও গিয়েছিলাম। কিন্তু ওদের গাড়িটা দাঁড় করাতে পারিনি। এর পর জাতীয় সড়ক ছেড়ে লোকাল রোডে নেমে যায় ওদের গাড়িটা। ম্যাডামের কথায় আমি লোকাল রোডে গাড়ি নামাই। গাড়ির গতিবেগ প্রায় ১০০ ছিল। আমি সামনেই নিস্তব্ধ। কিন্তু ওই টালমাটাল ধাক্কা লেগে উল্টে গিয়েছিল আমাদের গাড়িটা।”তাঁর দাবি, কোনও ই টিজিং হতে তিনি দেখেননি। রাজু ও শর্মার কথায়, “ই টিজিংয়ের অভিযোগ ড্রাইভারের। আমি সেদিনও বলিনি, আজও বলছি না। পিছনে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা হয়তো ওই অভিযোগ করেছিলেন। ওদের নজরে হয়তো কিছু পড়েছিল। কিন্তু আমি কিছু দেখিনি। ওদের ড্রাইভার বার বার আমাদের দিকে তাকাচ্ছিল। তবে আমাদের গাড়ির কাচ তোলা ছিল। ওদেরও গাড়ির কাচ তোলা ছিল। কোনও গালাগালি শোনা যায়নি। যেটা আমি শুনিনি তা কেন বলব!”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন