উড়িয়াড়া: শিবরাত্রির সন্ধ্যায় হাওড়ার এক ব্যবসায়ীর ওপর নৃশংস হামলার ঘটনা ঘটে, যা তাকে আজীবনের জন্য অন্ধ করে দিয়েছে। উড়িয়াড়ার বাসিন্দা মুক্তিকান্ত দাস, যিনি হাওড়ায় দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা চালাচ্ছেন, তিনি এক বছর আগে ফয়জল নামে এক যুবককে ধার হিসেবে ৪০০ টাকা মূল্যের মাল দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই টাকা তিনি আর ফেরত পাননি।
ঘটনার দিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে, ফয়জল কয়েকজন বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে দোকানে আসে। সে ফ্রিজ থেকে ঠান্ডা পানীয় বোতল বের করে এবং বিনামূল্যে সিগারেট চায়। মুক্তিকান্ত দাস তাকে তার আগের দেনার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রথমে টাকা মিটিয়ে তারপর মাল নিতে বলেন। এতে ফয়জল ক্ষিপ্ত হয়ে হাতে থাকা কোল্ড ড্রিঙ্কসের কাঁচের বোতল দিয়ে মুক্তিকান্ত দাসের মাথায় ও চোখে একাধিকবার আঘাত করতে থাকে। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন দোকানদার। হামলার পরপরই ফয়জল সেখান থেকে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন মুক্তিকান্ত দাসকে দ্রুত কাছের এক ক্লিনিকে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে হাওড়া জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে কলকাতার একটি বড় হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন, যেখানে অস্ত্রোপচার করেও তার বাম চোখের দৃষ্টি বাঁচানো সম্ভব হয়নি। চিকিৎসকরা পরিবারকে জানান, তার চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে এবং তাকে কৃত্রিম চোখ পরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উড়িয়াড়ায় থাকা তার পরিবারের সদস্যদের খবর দেন তিনি। পরিবার দ্রুত কলকাতায় আসে এবং চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয় যে তার দৃষ্টি আর ফিরবে না। ঘটনার পর মুক্তিকান্ত দাস থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান, হাওড়ায় ব্যবসা চালানো এখন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। পুলিশ প্রশাসন এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তিনি দ্রুত বিচার এবং অভিযুক্ত ফয়জলের কঠোরতম শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সহ-সভাপতি সঞ্জয় সিং দাবি করেন, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার ভেঙে পড়েছে। হাওড়া সিটি পুলিশের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর তারা তদন্ত শুরু করেছেন এবং দোষী ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন