কলকাতা: চৈত্রের শেষ থেকেই তীব্র দাবদাহে পুড়ছিল দক্ষিণবঙ্গবাসী৷ দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর নামে স্বস্তির বৃষ্টি৷ তাতে অবশ্য অনেকটাই পারদ পতন ঘটেছে৷ কেটেছে হাঁসফাঁস করা গরম৷ এবার আছড়ে পড়তে চলেছে ঘূর্ণিঝড়৷ মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহেই পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলে দাপট দেখাবে সাইক্লোন৷ মিলল তেমনই পূর্বাভাস৷ এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মোচা’৷
প্রাথমিক পূর্বাভাস অনুযায়ী, মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বিষুব রেখার কাছে সুমাত্রা সাগর বা আন্দামান সাগরে তৈরি হতে পারে এই ঘূর্ণিঝড়৷ তার পর শক্তি বাড়িয়ে আঘাত হানবে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলে৷ বঙ্গোপসাগরের আবহাওয়া ঘূর্ণিঝড়টির শক্তি সঞ্চয়ের জন্য সহায়ক হবে বলেই জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা৷
ঘূর্ণিঝড় ‘মোচা’ সাগরের বুকে শক্তি সঞ্চয় করার পর সম্ভবত উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ঠিক কবে তা উপকূলে আছড়ে পড়বে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, এখন থেকেই ‘মোচা’ নিয়ে নির্দিষ্ট পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। ঝড়ের গতিপথ সম্পর্কেও এখন থেকে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা যাবে না। গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে৷
অতীতে একাধিক ঘূর্ণাবর্তের মুখে পড়েছে দুই বাংলা। আমফান, ইয়াসের মতো ঘূর্ণিঝড় তীরিমতো তাণ্ডব চালিয়েছিল উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিতে৷ যার প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী। নতুন বছরের প্রথম ঘূর্ণিঝড় কতখানি প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে এখন থেকেই উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
আবহাওয়া সংস্থা ওয়েদার অব কলকাতার কর্মকর্তা রবীন্দ্র গোয়েঙ্কা ঘূর্ণিঝড় প্রসঙ্গে বলেন, ‘মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বঙ্গোপসাগরের আবহাওয়া ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির অনুকূল থাকবে। তবে ঝড়টি কবে এবং কোন অংশের উপর তৈরি হবে, তা এত আগে থেকে বলা সম্ভব নয়। ঝড়টি তৈরি হলে তখন তার গতিপথ নির্দিষ্ট করে বলা যাবে। আমরা পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছি।’’
প্রসঙ্গত, চলতি বছর পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি বাংলাদেশেও একাধিক জেলায় তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু, বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানী ঢাকায় নেমেছে স্বস্তির বৃষ্টি। এদিন দুপুরে ২টোর পর থেকে শুরু হয় ঝড়-বৃষ্টি। ঢাকার পাশাপাশি রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, ময়মনসিংহ ও সিলেট জেলাতেও বৃষ্টি হয়েছে।
ইদের আগে দক্ষিণবঙ্গের পাশাপাশি গোটা রাজ্যে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। তাপমাত্রার পারদ ছাড়িয়েছিল ৪০ ডিগ্রির ঘর৷ এপার পশ্চিমবাংলার পাশাপাশি বাংলাদেশেও একই রকম অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল৷ বৃষ্টির অপেক্ষায় ছিল দুই বঙ্গের মানুষ৷ বৃষ্টির দেখা অবশ্য মিলেছে৷ এবার মিলল ঝড়ের পূর্বাভাস৷
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন