
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি:
পহেলগাঁওয়ে হামলা চালিয়েও ক্ষান্ত হয়নি পাকিস্তান। নিয়ন্ত্রণ রেখায়
প্ররোচনা অব্যাহত পাক সেনার। টানা ৯ দিন ধরে নিয়ম করে গুলি চালাচ্ছে তারা।
সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করেই। এর পাশাপাশি শনিবার তারা পরীক্ষামূলক
উৎক্ষেপণ করেছে আবদালি ওয়েপন সিস্টেমের সারফেস টু সারফেস ব্যালিস্টিক
মিসাইল, যার রেঞ্জ ৪৫০ কিলোমিটার। অর্থাৎ, এই ক্রমাগত উস্কানির মধ্য দিয়েই
ভারতের বিরুদ্ধে প্রক্সি ওয়ার শুরু করে দিয়েছে পাকিস্তান।
তবে এখানেই
শেষ নয়। পাকিস্তানের এই ছায়াযুদ্ধের আরও একটি নয়া দিক সামনে এসেছে। সাইবার
অ্যাটাক। যার টার্গেট ভারতের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা। হানার ষড়যন্ত্রের
উৎপত্তিস্থল পাকিস্তান হলেও, নেপথ্যে ইসলামাবাদের ‘গডফাদার’ চীনের ছায়াই
দেখছেন গোয়েন্দারা। তাঁদের কাছে খবর, পাকিস্তানের সাইবার বাহিনী ভারতের
বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে অচল করে দেওয়ার ছক কষছে। টার্গেটের তালিকায় পরমাণু
বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলিও। বিদ্যুৎ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে তাই দেশজুড়ে
সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ন্যাশনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টারের
তরফে অ্যালার্ট করা হয়েছে রিজিওনাল লোড ডেসপ্যাচ সেন্টারগুলিকেও। আর
সাইবার হানার আশঙ্কা যে একেবারে অমূলক নয়, পরপর দু’টি ঘটনা তার প্রমাণ।
পাকিস্তানের হ্যাকার বাহিনী ভারতের আর্মি ও সিকিওরিটি এজেন্সির ওয়েবসাইটে
হানা দেওয়ার চেষ্টা করেছে সম্প্রতি। সাইবার গ্রুপ HOAX1337 এবং ন্যাশনাল
সাইবার ক্রু, এই দুই অ্যাড্রেস থেকে চেষ্টা করা হয়েছে ভারতের দু’টি আর্মি
সার্ভিস স্কুলের ওয়েবসাইটেও হানা দেওয়ার। ফল? চরম সতর্ক ভারত।
দেশে
বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে পাঁচটি রিজিওনাল পাওয়ার গ্রিডের আওতায়
থাকা ৩৩টি স্টেট লোড ডেসপ্যাচ সেন্টার। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, পাকিস্তানের
সাইবার বাহিনীর প্রাথমিক টার্গেট ভারতের নর্দার্ন গ্রিড। ২০১৯ সালের
অক্টোবর মাসে কুড়ানকুলাম নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টে সাইবার অ্যাটাকের
চেষ্টা হয়েছিল। দেশের বৃহত্তম এই পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র সাদার্ন গ্রিডে
বিদ্যুৎ জোগান দেয়। ওই সাইবার অ্যাটাক প্রতিরোধ করতে সমর্থ হয়েছিল ভারত।
কিন্তু এবার শুধু নর্দার্ন, সাদার্ন, ইস্টার্ন ও ওয়েস্টার্ন গ্রিড নয়,
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলির
নিরাপত্তাও দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ভারতের পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র
রয়েছে কলপাক্কম, কুম্ভকোনাম, কুড়ানকুলাম, তারাপুর, রাজস্থান অ্যাটমিক
পাওয়ার স্টেশন, জাইতাপুর, নারোরা, কাকরাপুরসহ মোট ২৫টি জায়গায়। কম্পিউটার
সিকিওরিটি ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম গোটা দেশের তাবৎ পাওয়ার গ্রিডের সুরক্ষা
ব্যবস্থা খতিয়ে দেখেছে। কুম্ভকোনাম নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্ট সহ তেহরি
ড্যাম প্রজেক্টকেও বিশেষ অ্যালার্ট করা হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন