নিউ ইয়র্ক: আমেরিকা, ভারতের চারটি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এই নিষেধাজ্ঞা ইরানের পেট্রোলজাত পণ্য বিক্রি ও পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে দেওয়া হয়েছে। সোমবার আমেরিকা সরকার এই তথ্য জানিয়েছে।
মার্কিন সরকারের বিদেশি সম্পদবিষয়ক অফিস ও বিদেশ দপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভারতের ওই চারটি প্রতিষ্ঠান হলো ফ্লুক্স মেরিটাইম এলএলপি, বিএসএম মেরিন এলএলপি, অস্টিনশিপ ম্যানেজমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড ও কসমস লাইনস ইনকরপোরেশন। কসমস লাইনস ইনকরপোরেশন ইরানের পেট্রোলজাত পণ্য পরিবহণে জড়িত থাকার অভিযোগে নিষেধাজ্ঞার আওতায় এসেছে। বাকি তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ইরানের জ্বালানি তেল ও পেট্রোলজাত পণ্য পরিবহনকারী বিভিন্ন নৌযানের বাণিজ্যিক অথবা কারিগরি ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত।
আমেরিকার অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, ইরান নিজেদের জ্বালানি তেলের বিক্রি বাড়ানো এবং অস্থিতিশীল কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য তহবিল সংগ্রহ করতে নৌযান, পরিবহণকারী এবং মধ্যস্থতাকারীদের একটি গোপন নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভর করে যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইরানের জ্বালানি তেল সরবরাহ ব্যবস্থার সব ক্ষেত্রকে লক্ষ্যবস্তু করতে নিজেদের সব সরঞ্জাম কাজে লাগাবে। যারা ইরানের তেল নিয়ে কাজ করবে, তারাও নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকিতে পড়বে, কারণ তেহরানের ওপর বড় পরিসরে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অনেক দেশ ও প্রতিষ্ঠান সরাসরি ইরানের তেল কেনে না।
সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞার পরেও ইরানের জ্বালানি তেলের বাণিজ্য চলছে। নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ইরানের তেল পরিবহনকারী ট্যাঙ্কারগুলো বন্দর এলাকার বাইরে নিষেধাজ্ঞা নেই এমন নৌযানে তেল সরবরাহ করছে, যা পরে বিদেশি ক্রেতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। তেহরান আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারী বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িত সামরিক বাহিনী এবং তাদের সমর্থিত বিভিন্ন সশস্ত্র গোষ্ঠীর পেছনে এই তেল বিক্রির অর্থ ব্যবহার করছে।
আমেরিকার অর্থ মন্ত্রক সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ভারতের চারটি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও সংযুক্ত আরব আমিরাত, হংকং ও চিনের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ইরানিয়ান অয়েল কোম্পানির প্রধান এবং ইরানিয়ান অয়েল টার্মিনালস কোম্পানিকেও নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রাখা হয়েছে।
আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা প্রতিষ্ঠানের ওপর আমদানি বা রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা, তাদের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করা, তাদের সম্পদ জব্দ করা এবং এক বা একাধিক দেশের ব্যাংক ব্যবস্থা ও মুদ্রা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। বর্তমানে রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা সবচেয়ে বড় দেশ। তিন বছর আগে ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর মস্কোর ওপর একরাশ নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিল ওয়াশিংটন। এছাড়া ইরান, উত্তর কোরিয়া, চিন সহ বিভিন্ন দেশের ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন