নয়াদিল্লি: অপারেশন সিন্দুরের সময় জঙ্গিদের মদতদাতা পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছিল তুরস্ক। অস্ত্র, ড্রোন দিয়ে ইসলামাবাদকে সাহায্য করেছিল তারা। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এরদোগানের দেশের ওই ভূমিকা ভালোভাবে নেয়নি নয়াদিল্লি। ইতিমধ্যেই তাদের সঙ্গে একাধিক সম্পর্ক ছিন্ন করা হয়েছে। এবার কূটনৈতিক চালেই পাকিস্তানের ‘বন্ধু’রাষ্ট্রের উপর চাপ সৃষ্টির কৌশল নিল ভারত। তারই অংশ হিসেবে রবিবার পূর্ব মধ্যসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্র সাইপ্রাস দিয়ে তিনদেশীয় সফর শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বরাবরই ভারত-সাইপ্রাস সম্পর্ক ভালো। কিন্তু, বিগত ৪০ বছরের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ইতিহাসে তৃতীয় ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদির সফর তাৎপর্যপূর্ণ। অঙ্ক কষেই তিনি সেখানে গিয়েছে বলে মত তথ্যাভিজ্ঞ মহলের।
আসলে তুরস্কের সঙ্গে সাইপ্রাসের সংঘাত দীর্ঘদিনের। ১৯৭৪ সালে দ্বীপরাষ্ট্রের অনেকটা অংশ দখল করে নিয়েছে এরদোগানের দেশ। টার্কিস রিপাবলিক অব নর্দান সাইপ্রাস নাম দিয়ে সেই অংশের পৃথক পরিচয় দিতে তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে। এই ইস্যুতে বরাবরই ভারত সাইপ্রাসের পাশে থেকেছে। এই সফরে রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিয়ন্ত্রণাধীন বাফার জোন গ্রিনলাইনেও গিয়েছেন মোদি। তুরস্কের দখল করে রাখা অংশকে পিছনে রেখে ছবিও তুলেছেন। নয়াদিল্লি স্পষ্টভাবে বুঝিতে দিতে চাইছে, জঙ্গিদের মদতদাতা পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে তুরস্ক। কিন্তু, সাইপ্রাসের অখণ্ডতা, সার্বভৌমত্বের ন্যায়সঙ্গত দাবিকে ভারত সমর্থন করে। তাই অপারেশন সিন্দুরের পরই প্রথম বিদেশ সফরে এই দ্বীপরাষ্ট্রকেই বেছে নেওয়া হয়েছে।
সাইপ্রাস সফরে সেদেশের প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্টোডৌলিডেসের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দু’জনেই পশ্চিম এশিয়া ও ইউরোপের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। এদিন মোদিকে সাইপ্রাসের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘গ্র্যান্ড ক্রস অফ দ্য মাকারিওস থ্রি’-এ ভূষিত করেছেন সেদেশের প্রেসিডেন্ট।
সাইপ্রাস সফর শেষে সোমবারই কানাডার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে জি-৭ বৈঠকে যোগ দেবেন তিনি। জাস্টিন ট্রুডো সরকারের আমলে খালিস্তানি ইস্যুতে দু’দেশের সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছিল। তবে কানাডার নয়া সরকার তা মেরামতিতে আগ্রহী। সেদিক থেকে মোদির এই সফর বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন