গাফিলতি কোথায়? তদন্তের ভরকেন্দ্রে শেষ ৫২ সেকেন্ড - Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Breaking

Aaj Bikel News | Latest Bengali News Bangla News, বাংলা খবর, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ, তৃণমূল, বিজেপি খবর

Aaj Bikel is currently West Bengal's leading, popular, authentic and trustworthy digital media. Aaj Bikel News has become the voice of crores of readers and viewers.

শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫

গাফিলতি কোথায়? তদন্তের ভরকেন্দ্রে শেষ ৫২ সেকেন্ড

 


নয়াদিল্লি: গাফিলতি কোথায়? ক্র্যাশের ২৪ ঘণ্টা পরও এই প্রশ্নই সবচেয়ে বেশি তাড়া করে বেড়াচ্ছে গোটা বিশ্বকে। গাফিলতি কার? উত্তর মিলছে না এই প্রশ্নেরও। ক্র্যাশের মুহূর্তে ড্রিমলাইনারের পরিস্থিতি ঠিক কী ছিল? এই উত্তর এবার মিলবে। কারণ, ব্ল্যাক বক্স পাওয়া গিয়েছে। অতএব গোটা বিশ্বের অধীর আগ্রহ দু’টি যন্ত্রকে কেন্দ্র করে— ডিজিটাল ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার এবং ককপিট ভয়েস রেকর্ডার। ফ্লাইট রেডার এবং এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ৫২ সেকেন্ড পর ড্রিমলাইনার আছড়ে পড়েছে। ৬২৫ ফুট উচ্চতা থেকে। তার ঠিক আগেই ‘মে ডে’ কল করা হয়েছিল এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলে। সেই শেষ যোগাযোগ। তারপর সব নীরব! এবং ধ্বংস! তাহলে বর্হিজগতের সঙ্গে সব সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর ওই অন্তিম ৫২ সেকেন্ডে ককপিটের মধ্যে পাইলট ক্যাপ্টেন সুমিত সাভারওয়াল এবং কো পাইলট ফার্স্ট অফিসার ক্লাইভ কুন্দেরের মুখ থেকে ঠিক কী কী কমান্ড বেরিয়েছিল? তাঁদের শেষ বাক্যগুলি কী ছিল? 

একমাত্র জানা সম্ভব ব্ল্যাক বক্সে থাকা ককপিট ভয়েস রেকর্ডার থেকে। ককপিটের মধ্যে কথোপকথন, কমান্ড, কমিউনিকেশন— সবই রেকর্ড করে ওই যন্ত্র। আর ব্ল্যাক বক্সে থাকা দ্বিতীয় যন্ত্র? ডিজিটাল ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার। যা মনিটর এবং রেকর্ড করে ফ্লাইটের অভ্যন্তরীণ প্রতিটি যান্ত্রিক মাপকাঠি। অর্থাৎ একটি ফ্লাইট রানওয়েতে দৌড় শুরু করা এবং টেক অফের পরও যাত্রাপথে হাইড্রলিক সিস্টেম, ইঞ্জিন পাওয়ার, ফুয়েল কন্টানিমেশন, অক্সিলিয়ারি পাওয়ার ইউনিট, ফ্ল্যাপ সেটিং, অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রার ভারসাম্য— প্রতিটি মানদণ্ড রেকর্ড করে চলে এই যন্ত্র। অতএব সবথেকে স্বস্তিকর হল, ব্ল্যাক বক্স পাওয়া গিয়েছে। এবার তদন্তকারীরা, বিশ্বের তাবৎ এয়ারলাইন্স সংস্থা, উৎপাদনকারী কোম্পানি বোয়িং, এভিয়েশন ইঞ্জিনিয়ার এবং ভারত সরকার জানতে চায় ঠিক কী ঘটেছিল? পাইলট ও কো পাইলট কি ক্র্যাশের আগে কোনও মেসেজ রেখে গিয়েছেন? সেই মেসেজেই মিলবে গাফিলতির সন্ধান? 


এখন কমলা ব্ল্যাক বক্সই তদন্তের প্রাথমিক হাতিয়ার। এয়ারক্র্যাফট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর তদন্তে সাহায্য করতে শুক্রবার ভারতে পৌঁছেছে আমেরিকার ন্যাশনাল ট্র্যান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের তদন্তকারীরা। এই তদন্ত টিমে যোগ দিতে এসে গিয়েছে ব্রিটিশ এভিয়েশন ইনভেস্টিগেশন সদস্যরা। অর্থাৎ শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক তদন্তকারী টিমের অনুসন্ধান। 


প্রাথমিক তদন্তে যে প্রশ্নগুলি সবথেকে ভাবাচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম হল, ড্রিমলাইলার টেক অফ করার পরও কেন ল্যান্ডিং গিয়ার ডাউন? আরও বিস্ময়কর হল, কেনই বা উইংস ফ্ল্যাপ আপ? অথচ, প্রোটোকল অনুযায়ী হওয়ার কথা ঠিক বিপরীত। আমেরিকার ন্যাশনাল ট্র্যান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান রবার্ট সামওয়াল্ট এই প্রশ্ন করেছেন। 


দুপুর ১টা ৩৯ মিনিটে  ফ্লাইট টেক অফ করেছে রানওয়ে নম্বর ২৩ থেকে। উড়ানের আগে রানওয়েতে ছোটা, ক্রমেই গতি বৃদ্ধি এবং টেক অফ—এই সময়সীমায় বোয়িং ৭৮৭’এর প্রতিটি যান্ত্রিক মাপকাঠি কি নিখুঁত ছিল? যদি না থাকে, যদি বিন্দুমাত্র ত্রুটির সন্দেহ পাইলট অথবা কো পাইলট অনুভব করেন, তাহলে তো আর তাঁরা টেক অফ করতেন না! কখন ভেঙে পড়ল ফ্লাইট? ফ্লাইট রেডার থেকে জানা যাচ্ছে, যখন সর্বোচ্চ ব্যারোমেট্রিক অল্টিচিউড ৬২৫ ফুট ছিল! আর ভার্টিক্যাল স্পিড ছিল মিনিটে ৮৯৬ ফুট! উড়ানের  নাক ছিল ব্যতিক্রমীভাবে বেশি ঊর্ধ্বমুখী। ভিডিও থেকে সন্দেহ করা হচ্ছে, এই সময়ই পাইলট ও কো পাইলট স্পষ্ট বুঝতে পেরেছেন যে প্লেন ক্র্যাশ করতে চলেছে। তাঁরা শেষ মুহূর্তেও মরিয়া চেষ্টা করছিলেন! এই সময়কালীন অনুপূঙ্খ বিবরণ পাওয়ার আশা রয়েছে ব্ল্যাক বক্স থেকে। ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার ২৫ ঘণ্টার বেশি তথ্য ও নথি রেকর্ড করতে সক্ষম। আর ককপিট ভয়েস রেকর্ডার শেষ ২ ঘণ্টার কথোকপথন ও কমান্ড রেকর্ড করে। মাত্র ৫২ সেকেন্ডের রেকর্ডিং চাই তদন্তকারীদের! যন্ত্র পরীক্ষার পাশাপাশি জেরা করা হবে কর্মীদের। মেইনটেনেন্স, রিপেয়ার অ্যান্ড অপারেশনস (ওএমআর) বিভাগের কারা ফ্লাইটের তাবৎ যান্ত্রিক পরীক্ষা করেছিল? তাদের প্রি ফ্লাইট ইন্সপেকশন রিপোর্ট কী ছিল? রহস্য কাটছে না! 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Loading...